অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক পেনশনসংক্রান্ত জারিকৃত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বুটেক্স শিক্ষক সমিতি।
মানববন্ধনে বুটেক্স শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, পেনশনসংক্রান্ত যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তাতে যথেষ্ট বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। সর্বজনীন এ পেনশন ব্যবস্থায় দেশ ও জাতিকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রীর যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়, তা বাধাগ্রস্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র। এ কারণে শিক্ষকদের প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থা থেকে বের করে নতুন পেনশন স্কিম চালু করা হলো। এতে আমাদের দেশ ও জাতির ক্ষতি হবে, দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশাটাকে কেউ প্রথম শ্রেণির পেশা হিসেবে নিবে না। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা বাতিল হয়ে যাবে এবং শিক্ষকদের পুনরায় প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থায় হস্তান্তর করা হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বুটেক্স শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সাইদুজ্জামান বলেন, প্রজ্ঞাপনটি শিক্ষক সমাজের জন্য সম্পূর্ণ শিক্ষাবিরোধী ও শিক্ষা বিদ্বেষী। আমি মনে করি, এটি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবীদের আসার যে সুযোগ তা বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা মাত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার যে প্রত্যয় ও আশা; প্রধানমন্ত্রী সে আশাকে সামনে রেখে একাত্মতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। যা শিক্ষা ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ছাড়া সম্ভব না। সর্বজনীন যে পেনশন স্কিম চালু হচ্ছে এতে কোনো মেধাবী শিক্ষকতা পেশায় আসবে না। আর মেধাবীরা না আসলে কখনো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব না। আমি বুটেক্স শিক্ষক সমিতি থেকে এ সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র পে স্কেল দাবি জানাচ্ছি।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি যাতে এ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন বৈষম্যের শিকার না হন। আমরা চাই দেশে একটা সুষ্ঠু ও উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাক। যদি মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে দেশের উন্নয়নে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। আমরা আশা করছি তা বাতিল করা হবে এবং দেশের একটা সুষ্ঠু ও মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে।
বুটেক্স শিক্ষক সমিতির সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মারজিয়া ইয়াসমিন বলেন, সর্বজনীন এ পেনশন ব্যবস্থা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য না পুরো দেশ ও জাতির জন্য ভবিষ্যতে ভয়ংকররূপ ধারণ করবে। মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসার জন্য একেবারে অনাগ্রহ প্রকাশ করবে। এ পেনশন স্কিম ব্যবস্থার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যাতে করে এ ধরনের কোনো ষড়যন্ত্র সফল না হয়।
মন্তব্য করুন