বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, বিলম্ব হলেও একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের এখনই উপযুক্ত সময় এবং সবার সম্মিলিত প্রয়াস থাকলে এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় হবেই।
সোমবার (২৭ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়ার আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) এবং ইউসিএলের সহযোগী অধ্যাপক ড. বায়েস আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
ওবায়দুল হাসান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় আমরাই একমাত্র জাতি যারা অনেক রক্তের বিনিময়ে দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধকে চিরতরে দমিয়ে দিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে এ দেশে বর্বর ও নির্মম গণহত্যা চালায়। পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো দেশে এত অল্প সময়ে এরকম গণহত্যা ঘটেনি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এ নারকীয় গণহত্যার এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে সংঘটিত এ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘটিত গণহত্যার চিত্র বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে।
প্রধাণ বিচারপতি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংস হত্যার পর এদেশে যে অগণতান্ত্রিক সরকারগুলো এসেছে, তারা যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসিত করেছে এবং গণহত্যার ইতিহাস মুছে দিতে চেয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার চিত্র তুলে ধরে বলেন, এ ন্যক্কারজনক গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এজন্য ব্রিটিশ একাডেমির অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা সম্পর্কে পরিপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি সমৃদ্ধ ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। এ ডাটাবেজ বিশ্ববাসীর কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে, যাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ অভিযানের নামে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী পরিচালিত নারকীয় গণহত্যা সম্পর্কে সবাই জানতে পারে।
মন্তব্য করুন