সিলেটে শুরু হয়েছে অ্যাডভান্সড কৃষি গবেষণা শীর্ষক দুই দিনব্যপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। সম্মেলনে আমেরিকা, জাপান, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, চায়না, কেনিয়া ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ৪৫টি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৬ শতাধিক শিক্ষক, গবেষক ও বিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণ করছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ১০টায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ অনলাইনে যুক্ত হয়ে সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন। সম্মেলনের প্রথম দিনই ব্যাপক অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন অংশগ্রহণকারী গবেষকরা।
জানা যায়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ছফি উল্লাহ ভূঞার স্বেচ্ছাচারিতার ফলে এসব অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, সম্মেলনে জমা হওয়া সব গবেষণা সারাংশ যাচাইবাছাই করে নির্ধারিত গবেষণাগুলো সম্মেলনে উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়। বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত সব গবেষকের মতামত না নিয়েই নিজেদের পছন্দমতো গবেষকের গবেষণা উপস্থাপনার জন্য বাছাই করা হয়।
এর মধ্যে আয়োজক কমিটিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মাহমুদুল ইসলামের ৮টি গবেষণা ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তিলক চন্দ্র নাথের ৮টি গবেষণা স্থান পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গবেষণা বাদ পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষক রাজনীতির জের ধরে ড. মো. ছফি উল্লাহর নেতৃত্বে এসব হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গবেষক। এ ছাড়া প্রতিটি গবেষণায় একাধিক গবেষক জড়িত থাকলেও প্রতিটি গবেষণার বিপরীতে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে মাত্র একজনকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ড. মো. ছফি উল্লাহর অসংলগ্ন আচরণে যেসব প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করতে রাজি হয়েছে তারাও নাকচ হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের যেসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার জন্য যথেষ্ট অর্থও আমাদের দেওয়া হয়নি।
৫৪৯ জন গবেষকদের নিবন্ধন ও পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকা ব্যয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ রয়েছে ড. মো. ছফি উল্লাহর বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া সম্মেলনের প্রথম দিন ব্যাপক অব্যবস্থাপনার ঘটনা ঘটেছে। সম্মেলনে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গবেষক জানান, আমি আমার গবেষণা উপস্থাপনের জন্য নিবন্ধন করলেও আমাকে উপস্থাপন করার জন্য কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। সময়সূচিতে তারা আমার গবেষণা বাদ দিয়েছেন। আদৌ উপস্থাপন করতে পারব কি না সেটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি, কিন্তু তারা ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন।
নিবন্ধনের জন্য অপর্যাপ্ত বুথ, টেকনিক্যাল সেশনগুলোতে সাউন্ড সিস্টেমের যান্ত্রিক ত্রুটি ও সময়সূচির হেরফের হওয়ার কারণে বিরক্ত হয়েছেন দেশ বিদেশ থেকে আগত গবেষকরা।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ছফি উল্লাহ ভূঞা জানান, আমাদের কাছে কেউ এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করেনি।
মন্তব্য করুন