প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) 'তুমি দেশের, তুমি দশের' শীর্ষক একটি আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে সংগঠনটি। এরপর সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য প্রদানকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, শেখ হাসিনার গাড়ি যখন স্বৈরাচারী পুলিশ টেনে নিয়ে গিয়েছিল নিজে পায়ে হেঁটে মিছিল করেছিলেন। সেই মিছিলের অনুপ্রেরণা থেকেই আজকে আমরা হয়তো এই দেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা হত্যা ও রাজাকারদের বিচার কার্যসম্পন্ন করতে পেরেছি। শোষিতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এগিয়ে নিতে রাজপথে শেখ হাসিনা মুক্তির কাজ করেছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশের মানুষ শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই, আপনি ফিরেছিলেন বলেই বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা জয় হয়েছে, আপনি ফিরেছিলেন বলেই আজ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে, বাংলার মানুষের ইলেকট্রিক ভেহিকেলের যুগে পা বাড়ানোর স্বপ্নপূরণ হয়েছে, যার বাস্তব প্রতিফলন হচ্ছে আমাদের মেট্রোরেল। বঙ্গবন্ধু কন্যা, আপনি ফিরেছিলেন বলেই আমাদের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের আজ জীবনের আরাধ্য স্বপ্ন পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হয়েছে, চট্টগ্রামে নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল বাস্তবায়িত হয়েছে, এ দেশের মানুষ দিন বদলের কাণ্ডারি খুঁজে পেয়েছে, আপনি ফিরেছিলেন বলেই আজ আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ দৃশ্যমান হয়েছে।
শেখ ইনান আরও বলেন, নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে এদেশের জন্য, আমাদের জন্য, মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া দুঃখী ও নিপীড়িত মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কাজ করেছেন, তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হলেও আমরা শপথ করতে চাই যে, আমরা শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবোই, তুলব।
এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সামরিক স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, বুলেট গ্রেনেড মোকাবিলা করেছেন, মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন, কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রবর্তন করেছেন, প্রত্যেকটি মানুষের নাগরিক অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেছেন। সামরিক স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। এই প্রত্যাবর্তনই বাংলাদেশে বিজয়ের গল্প রচনা করেছে, বাংলাদেশের পরিবর্তনের সূচনা করেছে।
তিনি বলেন, এমন সময়ে দেশরত্ম শেখ হাসিনা প্রত্যাবর্তন করেছেন, যখন এই বাংলাদেশে ছিল কার্ফিউ গণতন্ত্র, যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করত, যখন সামরিক স্বৈরশাসকরা টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনে দল পরিচালনা করত, যখন কোনো ভোটের অধিকার ছিল না। এ দেশের সাধারণ মানুষের জীবন জয়, মানুষের জীবন বদলে যাওয়া, সবকিছুর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সম্পৃক্ত। আমাদের এক সময় বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল, সেই অন্ধকারের যুগ থেকে দেশকে বঙ্গবন্ধুকন্যা আলোর যুগে ফিরিয়ে এনেছেন।
এ ছাড়া, সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা বক্তব্য রাখেন। কর্মসূচিতে রাজধানীর বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
মন্তব্য করুন