জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ব সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের বাউল ও লোকদর্শন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দুই দিনব্যাপী বাউল ও লোকগানের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ বাউল ও লোকশিল্পী সংস্থার সভাপতি বাউল শফি মন্ডল কর্মশালায় মুখ্য প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সোম ও মঙ্গলবার (২৯ ও ৩০ এপ্রিল) দুই দিনব্যাপী আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও রাতে ভাব গানের আসরের মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের আয়োজনে কর্মশালাটি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ বাউল ও লোকশিল্পী সংস্থা।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর কর্মশালাটির উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে প্রশান্তির সংকট। মানুষের ভেতরে শান্তি নেই, বাকি সব আছে। বাউলরা সেই প্রশান্তিই খোঁজে। তারা মনের প্রশান্তি খুঁজে দেয়। আজকে পাশ্চাত্য যে অভিঘাত তা থেকে বাউল সাধকরা আমাদের মুক্তি দিতে পারে। তাদের যে দর্শন এই দর্শনকে দেখবার জন্য, উপলব্ধি করবার জন্য বিদেশ থেকে লোক আসছে। এই বাউল আমাদের নিজস্ব সম্পদ। যে সম্পদ দিয়ে আমরা সারা বিশ্বে পরিচিত হতে পারি।
সংগীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মো. শহীদুল ইসলাম। গানের দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন সংগীত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. জাহিদুল কবীর, লেখক-গবেষক রুবেল সাইদুল আলম ও মো. তাজউদ্দিন।
সংগীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, বাউল শফি মন্ডল একজন গুণী মানুষ। অনেক শিল্পী ওনার গান শুনে বড় হয়েছে, অনুপ্রাণিত হয়েছে। আমাদের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওনার কাছ থেকে সরাসরি গান শেখার সুযোগ পেয়েছে। আমি মনে করি, ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটা বড় প্রাপ্তি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন সমৃদ্ধ হয়েছে, একইসঙ্গে আমাদের বিভাগও সমৃদ্ধ হয়েছে।
দুই পর্বের অনুষ্ঠানটির দ্বিতীয় পর্বে ভাব গানের আসরটি পরিবেশিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চুরুলিয়া মঞ্চে। এ সময় সংগীত পরিবেশন করেন বাউল শফি মন্ডল, অধ্যাপক ড. জাহিদুল কবির, রুবেল সাইদুল আলম, সরদার হীরক রাজা, প্রকৌশলী মোহাম্মদ খাইরুজ্জামান সবুজ, দিতি সরকার, মিজানুর রহমান ভুট্টো এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন