দাবদাহের মধ্যে গাজীপুরে নয়, ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) স্মারকলিপির একটি কপি কালবেলার হাতে আসে।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী। আমরা ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছি। এখানেই প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা দিয়েছি। শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে আমাদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, আমাদের ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রের ১৭টি ক্লাসরুম ফাঁকা থাকার পরেও, আমাদের দাবি উপেক্ষা করে গাজীপুরেই আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ অনড়।
এখন প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। আর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই দরিদ্র পরিবার থেকে আসা। ঝরে পড়া শিক্ষার্থী। জীবনের শেষ বয়সে এসে তারা চাকরির পাশাপাশি জ্ঞানার্জনের উদ্দেশে এখানে লেখাপড়া করছে। সেই শিক্ষার্থীদের শারীরিক ক্ষতি এবং আর্থিক ক্ষতি বিবেচনায় না নিয়েই কর্তৃপক্ষ ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে সরিয়ে পরীক্ষা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস গাজীপুরে নিতে চাইছে। তারা শুধু আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ঢাকায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আর অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে পরীক্ষা নিচ্ছে।
এমন অবস্থায় আমরা প্রথমে গত ২ এপ্রিল উপাচার্য বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিই। সেখানে আমরা দুটি দাবি জানাই, ১. ঈদের পরপরই পরীক্ষা না নিয়ে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া। যেন শিক্ষার্থীরা ঈদের টিকিট কাটার ঝামেলার মধ্যে না পড়ে। ২. গাজীপুরে পরীক্ষা না নিয়ে ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে পূর্বের মতোই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা।
আমরা অত্যন্ত বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, আমাদের দরখাস্ত জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটি কাটাবে তাই তারা আমাদের সামনেই টাইপ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে বুঝিয়ে আমাদের দাবি মতো পরীক্ষা এক সপ্তাহ পিছিয়ে নোটিশ টানিয়ে দেয়। কিন্তু আমাদের যে অন্য দাবি ঢাকায় আমাদের পরীক্ষা নেওয়া সেই দাবি তারা আমলে নেয়নি। আমরা বারবার, উপাচার্য মহোদয়, উপ-উপাচার্য মহোদয়, ডিন মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা আমাদের দাবি একেবারেই আমলে নিচ্ছে না।
এর প্রেক্ষিতে আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমাদের বিষয়টি অবগত করে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, বর্তমান দাবদাহের মধ্যে আমাদের পরীক্ষা পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী, ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রেই নেওয়া হোক। এতে করে, শিক্ষার্থীরা ভয়াবহ দাবদাহ থেকে রক্ষা পাবে এবং স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। গাজীপুর যাওয়া-আসা আমাদের জন্য এই দাবদাহের মধ্যে অত্যন্ত কঠিন।
স্মারকলিপির শেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা পরীক্ষা পেছানোর পক্ষে না। আমরা শুধু চাই আমাদের পরীক্ষা ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে নেওয়া হোক। আমরা এরইমধ্যে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। যদি আমরা কোনো উপকার না পাই, তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে উকিল নোটিশ পাঠাব।
মন্তব্য করুন