রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই শিক্ষার্থী লামিশা ইসলাম ও নাহিয়ান আমিন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা দোয়া মাহফিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
শনিবার (২ মার্চ) পৌনে ২টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাফেটেরিয়ার সামনে দোয়া মাহফিল এবং এরপর শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন আয়োজন করেন তারা। এ সময় বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারসহ শিক্ষকদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের কিছু দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- বেইলি রোডের অগ্নি দুর্ঘটনার মতো সকল অসাবধানতাজনিত দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে; এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; সকল বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য ভবনে বিল্ডিং কোডসহ জরুরি সকল কোড অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে কোনো কোড অমান্যকারী বা ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিং ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যাবে না; প্রতিটি ভবনের জন্য রাজউক থেকে প্রদান করা নিরাপত্তা লাইসেন্স মেনে চলতে হবে এবং নিয়মিত মনিটর করতে হবে; বিল্ডিং কোড সম্পর্কে জানার জন্য দক্ষ জনবল এবং সেই দক্ষ জনবলের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে; গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডারগুলো একটি ভবনের প্রবেশের বা প্রস্থানের পথে/স্থানে রাখা যাবে না। গ্যাস সিলিন্ডারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিপূর্ণ যে কোনো পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হবে; অফিসিয়ালদের পক্ষ থেকে প্রতিটি বাণিজ্যিক ভবনের অগ্নি-ব্যবস্থাপনা সিস্টেম নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে; সকল বিল্ডিংয়ে অগ্নিনির্বাপণের জন্য জরুরি সকল সামগ্রী এবং মার্কিং/চিহ্ন যাতে সবসময় থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবহার এবং প্রশিক্ষণ/ফায়ার ড্রিল বাধ্যতামূলক করতে হবে প্রতিটি বাণিজ্যিক কার্যালয়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং পাবলিক ওয়েলফেয়ার সেন্টারগুলায়; প্রতিটি বিল্ডিংয়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক এবং প্রশস্ত ইমার্জেন্সি এক্সিটের ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিরাপদভাবে প্রস্থান করার ব্যবস্থা রাখতে হবে; ইমার্জেন্সি এক্সিট এবং সিঁড়িগুলো ফাঁকা, পরিষ্কার ও ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রাখতে হবে যাতে যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবহার করা যায়; ভবন ব্যবহারের প্রকৃতি (যেমন, আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক)। কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ ও অনুমোদন ব্যতীত পরিবর্তন করা যাবে না; একই ভবনে স্বল্প জায়গা নিয়ে বানানো বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গাগুলো নিজ দায়িত্বে এড়িয়ে চলতে হবে প্রভৃতি।
মন্তব্য করুন