পাহাড়ি ছাত্র ও যুবনেতা বিপুল, সুনীল, লিটন, রুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের গণতান্ত্রিক ৫ সংগঠন।
সংগঠনগুলো হলো- বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এলাকায় গেলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিলে একপর্যায়ে একাডেমির সামনেই জিকো ত্রিপুরার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এ সময় ‘পাহাড়-সমতলে যৌন-সন্ত্রাসীদের রুখতে এক হও’, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে নব্যপাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তি সোচ্চার হও’, ‘বাঙালি জাতীয়তা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১১ দফা নির্দেশনা মানি না’ ও ‘পাহাড়-প্রকৃতি বাঁচাও, সীমান্ত সড়ক, পাহাড় কাটা ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করো’, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বন্ধ করো’ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লেকার্ড-ব্যানার প্রদর্শন করে স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ববর্তী সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কনিকা দেওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অংকন চাকমা।
অংকন চাকমা বলেন, নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী রাখা হয়েছে। কিন্তু বিপুল চাকমাদের হত্যার ২ মাস পরেও খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। উল্টো প্রশাসন খুনিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, গুম করা হচ্ছে। পাহাড় ও সমতলে একদেশে চলছে দুই শাসন। এই ভাষার মাসে আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশে বসবাসরত ৪৫টি অধিক জাতিসত্ত্বার নিজ নিজ মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক পর্যন্ত পড়ারও সুযোগ নেই। অপর জাতিসত্ত্বাদের এভাবে দমিয়ে রেখে কোনো জাতি মুক্ত হতে পারে না।
ছাত্র-যুবসমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে জিকো ত্রিপুরা বলেন, বিপুলসহ ৪ নেতা হত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্র-যুবসমাজের লাগাতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। ছাত্র-যুবকদের এসব দালালদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে এবং তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করতে হবে।
সংহতি বক্তব্যে ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের কোনো একটা অঞ্চলে সামরিক শাসন জারি রেখে আমরা স্বাধীন হতে পারি না। সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্টরা চাইলেই একজন ছাত্রনেতার জীবন কেড়ে নিতে পারে। বিপুল চাকমাদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে নিতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে বিপুল চাকমাসহ চার নেতা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আহ্বান জানান।
এ ছাড়া কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য রতন চাকমা।
মন্তব্য করুন