ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ কর্তৃক ওই বিভাগেরই এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক অতি দ্রুত শাস্তির দাবিতে বিভাগের সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ওই নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিচারের দাবিতে একটি অভিযোগপত্র দায়েরের পর এদিন রাতেই ১৩ থেকে ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিভাগের সকল ব্যাচের নেওয়া এই কর্মসূচি সম্পর্কে শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহিন আন নূর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে লিখেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩তম ব্যাচ থেকে শিক্ষায়তনের সকল ক্লাস, পরীক্ষা তথা একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা করছি। বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে আনীত যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের সুষ্ঠু সমাধান না আসা পর্যন্ত আমরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করছি না।
১৪তম ব্যাচের হাসান মেহেদি লিখেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪তম ব্যাচ সকল ধরনের যৌন সহিংসতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার। সম্প্রতি বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছি।
শেখ অহোনা নামে ১৫তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী লিখেন, আমরা সকলেই অবগত আছি, আমাদের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর যৌন হয়রানি ও মানসিক পীড়া দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। যা অত্যন্ত গুরুতর। বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করে তা অতিদ্রুত বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি এবং এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সকল ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দিচ্ছি।
১৬তম ব্যাচের ফারহান ওয়ারিক লিখেন, আমরা গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬তম ব্যাচ কাল (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে সব ধরণের ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জন করলাম। নিপীড়নের সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করছি না। সত্যের জয় হোক!
জান্নাতুল প্রমি নামে ১৭তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী লিখেন, আমরা সত্যের পক্ষে, সুন্দরের পক্ষে। প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। শিক্ষকসহ সবার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখে আমাদের সিনিয়রদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে আমরা চলমান সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি এবং সকল ধরনের ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জন করছি। আমরা কোনো অন্যায় সমর্থন করি না, করবোও না।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ব্যক্তিগত আক্রশ থেকে ফলাফলে ধস নামিয়ে দেওয়া ও ফল প্রকাশের আগেই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন উক্ত বিভাগের স্নাতকোত্তরের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এর রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল এক নারী শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগে তোলেন।
মন্তব্য করুন