রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীরা তীব্র আবাসন সংকট রয়েছেন। এদিকে বিলাসবহুল রুমে বসবাসের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পমেল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল রুম। সেখানে ৮ জনের সিট নির্ধারিত রয়েছে। তবুও একাই থাকছেন তিনি। রুমে বাইরে নেমপ্লেট লাগানো, দামি সোফা, রুমজুড়ে লালগালিচা বিছানো, জানালায় দামি পর্দা টানিয়ে নিজস্ব ডেরা গড়ে তুলেছেন এই ছাত্রলীগ সভাপতি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সূত্রে জানা যায়, কোনো শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগে কক্ষে ডেকোরেশন করতে পারেন না। এমনকি পড়াশোনা শেষ হলে কক্ষে আর অবস্থান করারও সুযোগ নেই। যতদিন পড়াশোনা আছে ততদিন শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারেন। কিন্তু কমিটি গঠনের পর থেকেই বর্তমান সভাপতি বিলাসবহুলভাবেই থাকছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী পরিচয় গোপন রেখে কালবেলাকে অভিযোগ করে বলেন, যেদিন হল খুলেছে, বাড়িতে সমস্যা থাকায় সেদিন আমি উঠতে পারি নাই। পরে আমার রুমমেট বলে, তোমার বেডে আরেকজনকে তুলে দিছে। তখন আমি হলে এসে ওই ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম, আমার লিগ্যাল সিটে তুমি কে। পরে সে বলে পমেল বড়ুয়া ভাইয়ের ছেলেরা তুলে দিছে। আমি সিট চাইলে আমার কাছে টাকা দাবি করে পমেল বড়ুয়া গ্রুপের সদস্যরা। টাকা না দিতে চাইলে তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেয়।
বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পমেল বড়ুয়া বলেন, নৈতিকভাবে বলতে গেলে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও হলে থাকা ঠিক না। রুম ডেকেরেশনের বিষয়ে বলেন, আমরা সাতজন মিলে রুমটা ডেকোরেশন করেছি। রাজনীতি করি, বিভিন্ন সময় নেতাকর্মীরা রুমে আসেন। তাই একটু রুমটা পরিপাটি করে রেখেছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হল প্রভোস্ট ড. বিজন মোহন চাকী বলেন, আমাদের আবাসন সংকট রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারে না, তারা বাইরে মেসে থাকেন। পড়াশোনা শেষ হলেই হল ছাড়তে হবে। এমন নিজের ইচ্ছেমতো রুম ডেকেরেশন করা ঠিক না। এই সংকট কাটিয়ে তোলার জন্য কাজ চলছে, আশা করি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুাকে সভাপতি ও রসায়ন বিভাগের মাহফুজুর রহমান শামীমকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
মন্তব্য করুন