গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি করলে সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরিচ্যুতি রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রণীত নীতিমালাটি হাইকোর্টে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পেলে এ নীতিমালা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ইউজিসি মিলনায়তনে রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন (রিসাপা) ডিভিশন আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এসব কথা জানান।
অধ্যাপক আলমগীর বলেন, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রণীত নীতিমালা হাইকোর্টে পাঠিয়েছে ইউজিসি। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পরে এটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়ে পাঠানো হবে।
চলতি বছরের ৩০ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও প্রকাশনায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ও চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। নীতিমালায় গবেষণা নকল বা সামঞ্জস্যের মাত্রা অনুযায়ী সংশোধনের সুযোগ দেওয়া সাপেক্ষে জরিমানা, ডিগ্রি বাতিল ও পদাবনতি, এমনকি চাকরিচ্যুতিসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে।
ইউজিসি সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালাটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, তা নিয়ে হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে সংস্থাটি।
এদিকে, কর্মশালায় আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্মানজনক অবস্থান নিশ্চিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সংস্কৃতি তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে ড. আলমগীর বলেন, ইউজিসি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্পন্ন ও ফলধর্মী গবেষণা পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণায় আগ্রহী করতে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণার ফলাফল প্রকাশে অনুদান, আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেমিনার আয়োজনে অর্থ সহযোগিতাসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণায় এগিয়ে যাবে বলে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহী করতে ইউজিসি উল্লেখযোগ্য হারে বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের দিয়ে গবেষণা পরিচালনা এবং মানসম্পন্ন গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীকে সম্মানজনক বৃত্তি এবং আবাসিক সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাসায়নিক বিজ্ঞান উপশাখার গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়নবিষয়ক এ কর্মশালায় ৩৬টি গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন করা হয়। রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন (রিসাপা) ডিভিশনের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
কর্মশালায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. আল নকিব চৌধুরী, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আবছার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এমরান কাইয়ুম, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ অংশ নেন।
মন্তব্য করুন