অবৈধভাবে হলে থাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রহমতুন্নেসা হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না আকতার তন্নীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। তবে সেই নির্দেশ অমান্য করে উলটো হল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রলীগের ওই নেত্রী।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রহমতুন্নেসা হলে এ ঘটনা ঘটে। আধা ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে হল গেটের তালা খুলে দেন।
এ ঘটনায় আবাসিক ছাত্রীরা হল গেটে অবস্থান নিতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ এসে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনার সময় রাবি ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী আসাদুল্লাহ হিল গালিব ও মেহেদী হাসান মিশু প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে ওই হলে প্রবেশ করেন।
ছাত্রলীগের ওই নেত্রীর নাম তামান্না আকতার তন্নী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি রহমতুন্নেসা হলের ৪৫৯ নম্বর কক্ষে থাকেন।
জানা যায়, গত ছয় মাস আগে ছাত্রলীগের ওই নেত্রীর একাডেমিক পড়াশোনা শেষ হয়েছে। ফলে তার সিটে অন্য ছাত্রীকে আবাসিকতা দিয়েছে হল প্রশাসন। তবে সিট ছাড়তে রাজি নন এই নেত্রী। এ নিয়ে তাকে একাধিকবার নোটিশ দিয়েছে প্রশাসন। সর্বশেষ গতকাল রাতে এ নেত্রীকে সিট ছাড়ার নির্দেশ দেন হল প্রাধ্যক্ষ। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে উল্টো হল গেটে তালা দেন তন্নি। এ সময় অন্যান্য হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও সেখানে এসে উপস্থিত হন।
অভিযোগে বিষয়ে রহমতুন্নেসা হল ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না আক্তার তন্নী বলেন, ‘আমি হল ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে আছি। বিভিন্ন প্রয়োজনে ছাত্রীরা আমার কক্ষে আসে। তাই প্রাধ্যক্ষই একটি সিট ফাঁকা রাখতে বলেছিলেন। এখন তিনি ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে এসব করছেন। এমনকি হলের জুনিয়র ছাত্রীদের দিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিতর্ক ছড়াচ্ছেন তিনি।’
তিনি আরো বলেন, আমি হলে রাজনীতি করি। এ হলে না থাকলে কর্মীদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। তাই সংগঠনকে গতিশীল রাখতে এ সিটে থাকার কথা বহুবার প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েছি।
জানতে চাইলে এ ব্যাপারে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হাসনা হেনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তার (ছাত্রলীগ নেত্রী) একাডেমিক পড়ালেখা শেষ। তারপরেও সে হলে সিট ধরে রেখেছে। এমনকি কক্ষের আলাদা একটি সিটেও কাউকে ওঠতে দেয় না। এদিকে অনেক গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী হলে সিট পাচ্ছে না। তাকে বিষয়টি একাধিকবার বলা হলেও সেটা অমান্য করেছে। সে ছাত্রলীগের পদাধিকার বলে হলে থাকতে চায়। ওই ছাত্রী বলে সে এমফিল করবে। কিন্তু এখানে এমফিল শিক্ষার্থীর জন্য কোনো সিট বরাদ্দ নেই। যে কারণে আমরা তাকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছি। আজকে তন্নী সাধারণ ছাত্রীদের আমার বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। আমি ছাত্রীদের শান্ত রাখার চেষ্টা করেছি। ভিসি স্যার আসলে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এখন মানবিক কারণে সে হলে থাকবে।
ছাত্রলীগের নেতারা হলে প্রবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, মেহেদী হাসান মিশু আমার ছেলের বন্ধু এবং আসাদুল্লাহ হিল গালিবের স্ত্রী এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিল। সেই সম্পর্ক থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য তাদেরকে হলে প্রবেশ করতে দিয়েছি।
প্রাধ্যক্ষের বক্তব্যের বিষয়ে আসাদুল্লাহ-হীল-গালিব বলেন, প্রাধ্যক্ষ ম্যামই আমাদের হলে প্রবেশ করতে বলেছিল। কিন্তু আমার কোনো স্ত্রী নেই। তবে রহমতুন্নেসা হলে আমার বোন থাকত।
মন্তব্য করুন