জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী না হয়েও ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নেওয়া ইউনুস মাতাব্বর নামের এক ছাত্র নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ।
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ নিয়েছিল ইউনুস। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শিক্ষার্থী হিসেবে জানাজানি হলে এই সিদ্ধান্ত নেয় শাখা ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ইউনুস মাতাব্বরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়া ইউনুস মাতাব্বর মিথ্যা প্রত্যয়নপত্র ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পদায়িত হয়। বিষয়টি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নজরে আসার পর ঘটনার সত্যতা যাচাই করলে তার প্রতারণার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইন বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে ইউনুস মাতাব্বরকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
এতে আরও বলা হয়েছে, প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া ইউনুস মাতাব্বরের কোনো অপকর্মের দায়ভার পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বহন করবে না। সেইসঙ্গে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউনুস মাতাব্বরকে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে একবার কল রিসিভ করলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি কেটে দেন। পরে তার ফোন বরাবরের মতোই বন্ধ পাওয়া যায়।
এই বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ইউনুস যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না, এটা যাদের সঙ্গে ক্লাস করেছে সে তার বন্ধুরাও বুঝতে পারেনি। আমাদের দেওয়া জীবনবৃত্তান্ত দেখে আমরা তাকে পদ দিয়েছি। বিষয়টি আমার আগে জানা ছিল না। তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা চাইলে শাস্তি দিতে পারি না, এটা আমাদের এখতিয়ারে নেই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ইউনুস যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করবে, সেটা কখনোই হতে পারে না।
উল্লেখ্য, ইউনুস মাতাব্বর নামের ওই যুবক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নন। আইন বিভাগের চলমান ব্যাচগুলোতে ইউনুস মাতাব্বর নামে কোনো শিক্ষার্থীর নাম নেই। বিভাগের নথিপত্রেও এই নামের কোনো শিক্ষার্থীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় দেওয়া ব্যাচের সহপাঠীরাও তাকে ক্লাসে দেখেন না। কয়েকবার বিভাগের করিডোরে তাকে দেখা গেলেও ক্লাস-পরীক্ষাতেও ছিল না তার কোনো উপস্থিতি। তবে ইউনুস মাতব্বরের আসল নাম আল আমিন জয়।
মন্তব্য করুন