খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে খানজাহান আলী থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এ ঘটনায় রোববার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ফুলবাড়িগেট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গভীর রাতে পুলিশি তল্লাশির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে খানজাহান আলী থানা ছাত্রদল।
প্রতিবাদ সভায় পুলিশের প্রতি প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, আপনারা এ অঞ্চলে যারা মাদক বিক্রেতা তাদের গ্রেপ্তার করেন না। যারা অস্ত্রধারী, অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, তাদের গ্রেপ্তার করেন না। আজকের পর থেকে কখনো, কোনো সময় সিনিয়র নেতাদের না জানিয়ে আপনারা কখনো দলীয় নেতাকর্মীদের বাসায় হানা দেবেন না।
খানজাহান আলী থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মাসুম বিল্লার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান বিপ্লবের সঞ্চালনায় এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তৃতা করেন খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা না দায়ের হওয়ায় আটক দুজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে স্থানীয় যুবদল নেতা মাসুম খান, ছাত্রদল নেতা সিয়াম হোসেন, খানজাহান আলী থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিপ্লব, বিএনপি নেতা মুন্সী আজমল হোসেন ও ছাত্রদল নেতা তানভীর আহমেদসহ ১০ থেকে ১২ জন তাদের মারধর করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আহত শিক্ষার্থী মোহন জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে তারা ফুলবাড়িগেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত এক দোকানে ফুচকা খেতে যাই। সেখানে ১০-১২ জন বহিরাগত তাদের ডাক দিলে তারা বলে, আমরা কুয়েটের শিক্ষার্থী যা বলার এখানে বলেন।
তিনি জানান, পরে ধাক্কাতে ধাক্কাতে রাহাতকে পাশের একটা দোকানে নিয়ে যায় গালিব এবং মারতে শুরু করে। মারধরের সময় তারা বলে, ভিসিকে কেন নামাইলি এবং নামিয়ে কেন আনন্দ মিছিল করলি?
হামলায়, ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ওবায়দুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম, গালিব রাহাত ও মোহন গুরুতর আহত হন।
এ বিষয়ে খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবীর হোসেন কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ জানার পরেই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা অভিযান শুরু করি। রাতেই দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি, বাকিদের আটকের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
উল্লেখ, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কুয়েট ছাত্রদল ও বহিরাগত বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কুয়েটের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
এ সংঘর্ষে মদতদাতার অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন কুয়েটের শিক্ষার্থীরা, দীর্ঘ ৬৫ দিনের আন্দোলনে কুয়েটের ভিসি মোহাম্মদ মাসুদকে অপসারণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরোধ চলে আসছে।
মন্তব্য করুন