দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ৬২ জন শিক্ষকের লেকচারার হিসেবে যোগদানের পর নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও আটকে আছে তাদের পদোন্নতি। পদোন্নতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পদোন্নতি দাবিকৃত শিক্ষকগণ।
পদোন্নতির নিয়ম অনুযায়ী প্রভাষক হিসেবে যোগদানের পর দুই বছর অতিবাহিত হলে এবং চাকরি স্থায়ীকরণ হলে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন শিক্ষকরা। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন ৬২ জন শিক্ষক। নিয়ম অনুযায়ী গত বছরের নভেম্বরেই শিক্ষকগণ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। কিন্তু দুই বছর শেষ এবং চাকরি স্থায়ী হওয়ার পরও আটকে আছে তাদের পদোন্নতি।
এ বিষয়ে প্রভাষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, আমরা বেশ কয়েকদিন ধরে আমাদের প্রমোশনের জন্য প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। এর আগে আমরা চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার বসে দাবি দিয়ে আমাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছি। এখন আবার প্রমোশনের জন্য আমাদের ঘুরাচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরেই আমাদের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় পূর্ণ করেছি। যেহেতু আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ হয়নি, সেটাও আমরা ইতোমধ্যেই নানা প্রতিবন্ধকতা সামলে স্থায়ীকরণ সম্পন্ন করেছি। এখন প্রমোশনের জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে প্রশাসন আমাদের বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছে।
প্রভাষকরা আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারারদের সব থেকে বেশি ক্লাসের চাপ থাকে। এছাড়াও আমাদের গবেষণাও করতে হয়। উচ্চশিক্ষার জন্য প্রিপারেশন নিতে হয়। প্রমোশন না হওয়ায় আমরা আমাদের কার্যক্রমে মনোযোগ দিতে পারছি না। এছাড়াও রিসার্চ প্রজেক্টগুলোতেও অংশগ্রহণ করতে পারছি না বিশেষ করে আইআরটি রিসার্চ প্রজেক্টে এ অংশগ্রহণ করতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন যেন দ্রুততম সময়ে একটা বোর্ড গঠন করে আমাদের প্রমোশনের ব্যবস্থা করে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বোর্ড গঠন করতে বিলম্ব হওয়ার কারণকে দায়ী করে তিনি বলেন, প্রমোশনের বিষয়ে কাজ চলছে। প্রমোশনের জন্য যে বোর্ড গঠন করা হয় সেখানে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত প্রতিনিধি থাকেন। এই বোর্ডের মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হয়ে গেছে। মেয়াদ শেষ হলেও নতুন বোর্ড গঠন না করা পর্যন্ত ওই বোর্ড দিয়েই কার্যক্রম চালানো যায়। সে মোতাবেক এতোদিন মেয়াদোত্তীর্ণ বোর্ড দিয়েই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব বোর্ডে আগের আমলের মানুষজন আছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক তাদেরকে পরিবর্তন করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তা অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত বোর্ড গঠন হচ্ছে না।
আনুমানিক কতদিন লাগতে পারে এর জবাবে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। কতদিন লাগতে পারে এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে আমরা কাজ করছি। আশা করি, দ্রুতই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
মন্তব্য করুন