বাংলাদেশ টাইমসের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার নাহিমুর রহমান শাকিলের বাবাকে ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে প্রতিবাদ ও মুক্তি চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাকিল বলেন, গত ১৭ এপ্রিল আমার বাবা মো. শাহাবুদ্দিনকে সন্ধ্যা ৭টার সময় পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে আমরা জানতে পারি, হাতিয়ার আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর ক্যাডার আবুল কালাম আমার বাবাকে একটি মামলায় আসামি করেন। ২০১৮ সালের একটি ঘটনাকে টেনে ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর আমার বাবাকে ৩২ নম্বর আসামি করে মামলা করেন তিনি, যা মিথ্যা ও বানোয়াট।
তিনি বলেন, আমরা এত দিন ধরে এই মামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। তা ছাড়া মামলায় আবুল কালাম আমার বাবার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও উল্লেখ করতে পারেননি। মামলায় ৩৩ জন আসামির মধ্যে আমার বাবাকে ৩২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শাকিল বলেন, বাদী আবুল কালাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর ক্যাডার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতীকের প্রকাশ্যে মিছিল-মিটিং করেছেন। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তার অত্যাচারে এলাকার বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা অতিষ্ঠ ছিলেন। সেই লোক এখন বিএনপি সেজে টাকার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছেন। নিজেকে নব্য বিএনপি নেতা দাবি করছেন।
মামলা-বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্ট-পরবর্তী কয়েকটি মামলার বাদী হয়ে তিনি এখন বাণিজ্য শুরু করেছেন। এই আবুল কালাম আমার বাবাসহ বহু নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। এর সঙ্গে একজন আইনজীবী জড়িত আছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া আতাউর রহমান রাফি নামের একজন ছাত্রলীগ নেতাও জড়িত ছিলেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের এই সদস্য বলেন, হাতিয়া বুড়িরচর ইউনিয়ন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রহমান রাফিসহ নামে-বেনামে আমাদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। যে পরিমাণ টাকা আমাদের কাছে নেই। টাকা দিলে তারা মামলা উঠিয়ে নেবে, এমন কথা জানায়। এতে বোঝা যায় সুপরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার বাবা সাধারণ জীবন যাপন করেন। দিন এনে দিন খাওয়ার মতো আমাদের অবস্থা। এলাকায় আমার বাবার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার আমলে হাতিয়া উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি রাজ্জাকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল এই রাফি। একসময় তিনি চাঁদাবাজি করে বিএনপি ও নিরীহ লোকদের হয়রানি করেছে। রাফিদের একটি পারিবারিক ঘটনায় আমার বাবাকে তাদের পক্ষে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। আমরা যতটুকু বুঝতে পারি, তাতে আমার বাবা রাজি না হওয়ায় রাফির বাবা আইনজীবী হওয়ার সুবাদে আমার বাবাকে এই মিথ্যা মামলায় আসামি করে দেওয়া হয়।
তা ছাড়া আমি এলাকার নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি নিয়ে একটু স্বোচ্ছার থাকায় তারা আমার ওপরও ক্ষুব্ধ। আমার ধারণা, সে কারণেও আমার বাবাকে হয়রানি করা হতে পারে। আমার বাবাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানাই এবং আমার বাবার মুক্তি চাই।
মন্তব্য করুন