খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কারের ঘটনাকে ‘অন্যায্য’ উল্লেখ করে স্ট্যান্ড উইথ কুয়েট কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সাংবাদিকদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এদিকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর প্রশাসনের চলমান আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে মানববন্ধন করবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
এদিন দুপুর ১টায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এতে বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীসহ প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে একই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আজ দুপুর ২টায় সংবাদ সম্মেলনে ডেকেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘কুয়েটে অন্যায্যভাবে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহিন আহমদের ওপর বিএনপির হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জরুরি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করছে।’
এর আগে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা ডিভিশনের পাবলিক রিলেশনস অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যম পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৯৮তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সভায় উপস্থাপন করা হয় এবং তদন্ত প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেট কর্তৃক গ্রহণ করা হয়। উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি, তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এদিকে, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। হল না খোলা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের দাবি ছিল সোমবার রাত থেকেই হল খুলে দিতে হবে। এ ছাড়া সিন্ডিকেট সভা শেষে তারা অপেক্ষা করছিলেন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো তাদেরকে জানাবে। কিন্তু কেউ তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তগুলো জানায়নি। হল খোলা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরুর অনেকদিন দেরি রয়েছে। একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া হলে থাকতে না পারায় তাদের টিউশনি বন্ধের উপক্রম।
তারা জানান, ৩৭ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের তালিকা দেখে সকালে তারা আবার প্রেস ব্রিফিং করবেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মন্তব্য করুন