সকাল থেকে নববর্ষের উৎসবে মেতেছে সারা দেশ। বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা ভুলে বাহারি সাজে শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজন হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে বাঙালির এই প্রাণের উৎসব স্পর্শ করেনি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের।
হল না খোলায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা। এখনো সেখানে অবস্থান করছেন ২০-২৫ শিক্ষার্থী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোববার রাত থেকে প্রশাসনিক ভবনের বাথরুম তালা বন্ধ করে রেখেছে। যে কারণে আমাদের পার্শ্ববর্তী ভবনে গিয়ে বাথরুম ব্যবহার করতে হয়। খাওয়া-দাওয়া এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে পরবর্তীতে ঢুকতে নিরাপত্তা কর্মীরা আমাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করছে। সকালে অনেক শিক্ষার্থী ভিতরে ঢুকতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা সৃষ্টি করে তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, রোববার (১৩ এপ্রিল) পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে কুয়েটের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের আলোচনা শেষে আইডি কার্ড যাচাই করে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি পান শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিকালে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানায়। হল খুলে দেওয়ার জন্য রাত ৮টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কুয়েট কর্তৃপক্ষ দাবি না মানায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে রাত্রি যাপন করে।
শিক্ষার্থীরা আক্ষেপ করে বলেন, গত পাঁচ বছর রমজানের মধ্যে নববর্ষ থাকায় আমরা এ উৎসব উদযাপন করতে পারেনি। এ বছর আমাদের আশা ছিল বাংলা নববর্ষ উদযাপন করব। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ বছর বাংলা নববর্ষের দিন বিশ্ববিদ্যালয় হল খোলার দাবিতে আমাদের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কাটাতে হলো।
এদিকে আজ (সোমবার) সন্ধ্যা ৭টায় সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডেকেছে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শেখ শরিফুল আলম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা বর্তমানে যে অবস্থায় আছে তা অমানবিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু এবং সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই আজ এই জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে।
মন্তব্য করুন