বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্টে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর গত ১১ আগস্ট ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু একমাত্র অধ্যাপক হওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিন গত ৭ অক্টোবর থেকে পুনরায় একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে পুনর্বহাল করেন।
নোটিশে আরও বলা হয়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য সিন্ডিকেট সভায় তাকে সদস্য হিসেবে উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান করেন। অথচ অধ্যাপক মুহসিন সশরীরে বা অনলাইনে সিন্ডিকেট সভায় অনুপস্থিত থাকেন। অনলাইন সভায় যোগদানের স্বাভাবিক সুযোগ না থাকার কারণ জানিয়ে তিনি সভা বয়কট ও প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিক লিখিতভাবে হোয়াটসঅ্যাপে পত্র প্রেরণ করেন। এছাড়া অধ্যাপক মুহসিনের উপস্থিতিতে কতিপয় শিক্ষার্থী উপাচার্যের রেসিডেন্স কাম অফিসের গেট ভাঙচুর করেন, যা মোটেও শোভনীয় ছিল না বলে উল্লেখ করা হয় ওই নোটিশে।
এছাড়া গত ১৭ ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর নিচে তার নেতৃত্বে কতিপয় শিক্ষককে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় উপাচার্যের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যসহ বিষোদ্গার করেন তিনি- যা চাকরি বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয় নোটিশে। এসব আচরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করেছেন ববি উপাচার্য। এছাড়া তিনি উপাচার্যকে পতিত সরকারের দোসর বা ফ্যাসিস্ট বলে উল্লেখ করে বক্তব্য রেখেছেন, যা সম্পূর্ণ অসত্য।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চাকরির পুলিশ ভেরিফিকেশনে দেখা যায়, অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন এবং তার পরিবার আওয়ামী লীগের সমর্থক। এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ও নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন তিনি। এসব কারণে অধ্যাপক মুহসিন নিজেই পতিত সরকারের দোসর ছিলেন। এসব পর্যালোচনা করে তাকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক সদস্য থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
সদ্য অব্যাহতি পাওয়া অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন কালবেলাকে বলেন, যে কারণে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বেআইনি। বরং নোটিশে উপাচার্য পতিত সরকারের কথা বলেছেন, তাহলে বোঝায় যায় তিনিই গত সরকারের লোক।
মন্তব্য করুন