বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষকদের হাজিরা শিটে মুজিববর্ষের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি হেয়াত মাহমুদ ভবনে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন দায়িত্বে থাকা রিজার্ভ শিক্ষকদের হাজিরা শিটে মুজিব বর্ষের লোগো দেখা যায়। এ শিটে রিজার্ভ ডিউটির তালিকায় আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন ও নীল দলের প্রতিষ্ঠাতা ড. আপেল মাহমুদসহ পাচঁজন শিক্ষকের নাম ছিল। এর মধ্যে তিন শিক্ষক এতে স্বাক্ষরও করেন। বিষয়টি শিক্ষকদের নজরে এলে হলে তারা ওই হাজিরা শিটসহ বাকি তিনটি ভবনের দায়িত্বরত শিক্ষকদের হাজিরা শিটেও বঙ্গবন্ধুর লোগো থাকায় সেগুলোও সরিয়ে ফেলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরীক্ষা সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশনস্ সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ও আওয়ামীপন্থি নীল দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. আপেল মাহমুদ। এর আগে তিনি আবু সাঈদ বই মেলা কমিটিতে থেকেও বিতর্কের মুখে পদত্যাগ করেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কট্টর আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ড. আপেল মাহমুদ ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ক্যাম্পাসে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েই ২০১৪ সালে নীলদল প্রতিষ্ঠা করে নিজেই সভাপতি হন। এরপর হয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে রয়েছেন কার্যকরী সদস্য পদে। এছাড়াও নীল দলের প্যানেলে থেকে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ২০২৩ সালে জয়লাভও করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. আপেল মাহমুদ বলেন, আমার দায়িত্ব ছিল শুধু যোগাযোগ করা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে টিম আসছে তাদের সঙ্গে থাকা। রাজশাহী টিমের যাবতীয় সব কিছু আমি দেখাশোনা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাগজপত্রে এখনো মুজিববর্ষের লোগো থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
কোটা আন্দোলনের বেরোবির সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধনের জন্য যখন দল-মত নির্বিশেষে কাজ করছে তখনও পরাজিত শক্তি বিভিন্নভাবে সেটিকে প্রতীয়মান করে যাচ্ছে এটি তারই বহিঃপ্রকাশ । এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী কালবেলাকে বলেন, একজন শিক্ষক এটি ভুলবশত করেছিলেন। তাকে ডেকে জানানো হয়েছে। পরে সংশোধন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন