রাজধানীর সরকারি ৭ কলেজের সমন্বয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কিন্তু তিতুমীর কলেজ আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন করলেও সরকারের প্রতি আস্থা রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বীকৃতি জানিয়েছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৭ মার্চ) তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি তিতুমীর কলেজসহ সরকার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সাতটি কলেজের সমন্বয়ে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করছে। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইউজিসি রোববার (১৬ মার্চ) সাত কলেজের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নাম (ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়) প্রস্তাব করেছে। আমরা সরকারি তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতি আস্থা ও ইউজিসির প্রতি সমর্থন রেখে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই এবং দৃঢ়ভাবে এর পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করছি।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের বিশ্বাস, এই উদ্যোগ শিক্ষার মানোন্নয়ন, বিগত সময়ের প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা এবং শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। এতদিন ধরে সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকায় নানা প্রশাসনিক ও শিক্ষাবিষয়ক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। ফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রিতা, শিক্ষা কার্যক্রমে সমন্বয়ের অভাব, ক্লাস ও পরীক্ষার সময়সূচির বিশৃঙ্খলতা এবং প্রশাসনিক জটিলতা আমাদের শিক্ষা জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এসব সমস্যা দূর করতে আলাদা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ইউজিসি প্রদত্ত এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র ও আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা পাবে, যা তাদের অ্যাকাডেমিক ও পেশাগত ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই মহৎ উদ্যোগের বিরোধিতা করছে। তারা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, তিতুমীর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের পক্ষে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকতে চায়। আমরা কোনো ধরনের উসকানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলনের সাথে নেই। বরং আমরা চাই, দ্রুত এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হোক এবং আমরা আমাদের শিক্ষাজীবনের কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ ফিরে পাই।
আমরা ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন হয় এবং সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি স্বতন্ত্র, কার্যকর এবং আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধীনে উন্নত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। পাশাপাশি, আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, যাতে কোনো গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করতে না পারে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।
আমরা, সাধারণ শিক্ষার্থীরা, উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, দ্রুত ফলপ্রকাশ, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং গুণগত শিক্ষার নিশ্চয়তা চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন জানাই এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য দাবি জানাই।
সরকারি তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের প্রতিনিধি হয়ে বিজ্ঞপ্তিতে নাম লেখান- সবুজ মাদবর, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ (২০১৮-১৯), সেলিম রেজা, সমাজবিজ্ঞান (২০১৮-১৯), রাকিবুল ইসলাম সৈকত (২০-২১), এম এন মানিক, দর্শন (২০২১-২২), মো. সানি, হিসাববিজ্ঞান (২০২২-২৩), আলফাজুর রহমান তুর্য, পদার্থবিজ্ঞান (২০২৩-২৪), রিফাত আহমেদ, ইসলাম শিক্ষা (২০২৩-২৪), সিয়াম হোসাইন, পদার্থবিজ্ঞান (২০২৩-২৪), শফাক আহমেদ, ইংরেজি (২০২০-২১), আব্দুল্লাহ মুন, উদ্ভিদবিদ্যা (২০২৩-২৪), সাদ আহমেদ সালমান, ইতিহাস (২০২৩-২৪), সাদিয়া, ইংরেজি (২০২৩-২৪) ও সুমাইয়া মিম, অর্থনীতি(২০২৩-২৪)।
মন্তব্য করুন