সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিতর্ক প্রদর্শনী আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচে এ বিতর্কের আয়োজন করা হয়। বিতর্কের মোশন ছিল -এই সংসদ মনে করে, আইনি কাঠামোর দুর্বলতায় ধর্ষণ বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
এ সময় সরকার দলের সজিবুর রহমান বলেন, ধর্ষণের শিকার হয়ে নারী মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অথচ এখনো পর্যন্ত কোনো বিচার আমাদের চোখে পড়েনি। আসলে ধর্ষণের কোনো বিচার আমাদের দেশে হয় না।এর পেছনে কাজ করে দুর্বল আইনি কাঠামো। এগুলো অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় আছে। দেশে আইন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। যেখানে-সেখানে পর্যাপ্ত সিসি টিভির অভাব। আইনি প্রক্রিয়া নারীবান্ধব না। কেউ থানায় গিয়ে বিচার দিবে তখন জটিলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় । ঘুষের মাধ্যমে অপরাধী তার জায়গা মজবুত করে ফেলে এজন্য ভিক্টিম বিচার পায় না। যে অপরাধ করে তার মধ্যে সচেতনতা থাকে না। সচেতনতা বাড়লেই ধর্ষণ কমবে না। এটি কমানোর জন্য প্রয়োজন আইন কাঠামোর শক্তিশালী করা।
বিরোধী দলের কিশোর আনজুম সাম্য বলেন, আসলে যে পরিমাণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তার পরিপ্রেক্ষিতে এখানে কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণ বলতে কিছু নেই, অনেকগুলো কারণ একসাথে মিলে প্রভাব বিস্তার করে। সমাজের অধিকাংশ মানুষ যদি সচেতন হইত তাহলে আজকে এই সকল ধর্ষণের ঘটনা ঘটতো না। সমাজের মানুষ অনেক বেশি আবেগি এবং তারা শুধু ট্রেন্ডে থাকা বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে ।
তিনি আরও বলেন, ধর্ষণের কারণ কোনো আইনি দুর্বলতা না, এটা মূলত নৈতিক দুর্বলতা। আপনি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখা শুরু করলেই আইনি শাসন কাঠামো শক্তিশালী করা ব্যতিরেখে সমাজে ঠিক করা সম্ভব। মানুষকে শুধু আইনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়। সমস্যার মূল জায়গাটা নির্ধারণ করে সেটা সমাধান করার জন্যই আইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো আইন কীভাবে চলবে সেটা নির্ভর করে সমাজের চলিত রীতির ওপর।
ওই বিতর্কে সরকার দল হিসেবে অংশ নেয় সজিবুর রহমান, মাঈন আল মুবাশ্বির ও জাকির হোসেন এবং বিরোধী দল হিসেবে অংশ নেয় মেহেদী হাসান, কিশোর আনজুম সাম্য ও নাঈম হুদা। এছাড়া বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম আরিফ, জেএনইউডিএস’র দপ্তর সম্পাদক মুনিব মুসান্না ও কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জাকারিয়া। ওই ধর্ষণবিরোধী সচেতনতামূলক প্রদর্শনী বিতর্কে হ্যাঁ ও না ভোটে উভয়পক্ষকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন