চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) হলে মাদক সেবনের দায়ে চার শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি তাদের আবাসিক হল থেকেও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটির সদস্যসচিব ও চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত চারটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের তিনজন পুরকৌশল বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এবং একজন যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের ৪০২ নম্বর কক্ষে প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টদের অভিযান চলাকালে চার শিক্ষার্থী ও দুই ক্যান্টিন বয়কে সন্দেহজনক অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে কক্ষ তল্লাশি করে আনুমানিক ২০ গ্রাম গাঁজা ও ৫০০ গ্রাম মদ পাওয়া যায়। দুই ক্যান্টিন বয়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা শিক্ষার্থীদের মাদক সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করেন। শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন জব্দ করা হলে এবং কল লিস্ট চেক করা হলে ক্যান্টিন বয়ের সঙ্গে ফোনালাপের সত্যতা পাওয়া যায়। এক ক্যান্টিন বয়ের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে চার শিক্ষার্থীকে ৪০২ নম্বর কক্ষে বসে মদ পানের ভিডিও পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের গাঁজা ও মদসেবন এবং এসব মাদকদ্রব্য নিজ অধিকারে রাখার জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় হল প্রভোস্টদের লিখিত অভিযোগ ও জব্দ আলামতের ভিত্তিতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটির ২৮৩তম জরুরি সভায় তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদকপ্রতিরোধ নীতিমালা-২০১৬ এর বিধি অনুযায়ী তাদের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে দুই বছরের বহিষ্কার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটি সবদিক বিবেচনা করে ন্যূনতম শাস্তি প্রদান করেছে। মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ নীতিমালার বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আরও কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে ১১ মার্চের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছে। যে কোনো উপায়ে মাদক নির্মূলে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের প্রভোস্টরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মাদকসহ আটক করেছেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সর্বনিম্ন হিসেবে তাদের এ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন