খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে বিএনপির বিবৃতি ও ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলনে আনীত কথিত অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখার নেতারা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগর সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন এবং সেক্রেটারি রাকিব হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ছাত্রদল সশস্ত্র হামলা চালায়। যার সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ছাত্রদল ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এই নৃশংস হামলার নেতৃত্ব দেয়। যাতে শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। ওই হামলায় যে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত তার বড় প্রমাণ হচ্ছে দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমানকে বহিষ্কার। ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে মাহবুবুর রহমানসহ আরও অনেক বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
ঘটনার সময় ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখার সকল জনশক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে শহরের হাদিস পার্কের বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করে। এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মনগড়া মিথ্যা বিবৃতি প্রেরণ করেছেন। যেখানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে আখ্যায়িত করেন। বিবৃতিতে তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে ছাত্রশিবির নেতারা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে একটি দল নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।
ছাত্রশিবির নেতারা আরও বলেন, বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন থেকেও ছাত্রশিবির সম্পর্কে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাহুল জাবেদ ও ইফান জমাদ্দারের বক্তব্যের কোন মিল নেই। তাছাড়া কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ছাত্রদল যে কুয়েটে রাজনীতি করছে তার প্রমাণ কুয়েট ছাত্রদলের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করা। সেখানে ছাত্রশিবিরকে ‘গুপ্ত সংগঠন’ উল্লেখ করার বিষয়টিও দুঃখজনক। কারণ শিবির সকল কর্মসূচিই প্রকাশ্যে করছে।
নেতারা আরও বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি ছাত্রদল নিজেরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে বারবার নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের স্টাইলে ছাত্রশিবিরের উপর দায় চাপানোর হীন চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা এমন ঘটনায় বিস্মিত ও গভীর উদ্বিগ্ন। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত সচিত্র প্রতিবেদনে যাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা যাচ্ছে তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি’।
মন্তব্য করুন