খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে পৃথক পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদল, শিক্ষার্থী ফোরাম ও হিউম্যান রাইটস সোসাইটি।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে শিক্ষার্থী ফোরাম বিক্ষোভ মিছিল করে এবং একই স্থানে হিউম্যান রাইটস সোসাইটির উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে রফিক ভবনের সামনে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে মৌন মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
এদিন বেলা ১টায় শুরু হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফোরামের বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের বিচার করো’, ‘আমার বোন আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একসাথে লড়াই করেছি। কিন্তু কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ছাত্রলীগের মতোই আচরণ। শিক্ষার্থীদের বি-রাজনীতিকরণের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থী ফোরামের সদস্য ইভান তাহসীভ বলেন, শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছিল। কিন্তু তাদের ওপর যে বর্বর হামলা চালানো হয়েছে, তা স্পষ্টত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। আমরা দোষীদের বিচার চাই এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।
অন্যদিকে মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটির বক্তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব, কিন্তু বারবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হামলা শিক্ষার পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বক্তারা আরও বলেন, কুয়েটের শিক্ষার্থীরা একটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করছিল, কিন্তু তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে নৃশংসভাবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাই।
সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস বলেন, আমরা চাই, দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখুক এবং শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা হোক। কুয়েটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার না হলে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মানবন্ধনে হিউম্যান রাইটস সোসাইটির পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি পেশ করা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো, কুয়েটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
এ দিকে কুয়েটে ছাত্রদলের উপর হামলার প্রতিবাদে মৌন মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এসময় ছাত্রদলের কয়েকশো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সহবস্থান চাই। সকলকে সেই ব্যাপারে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, আমাদের ছাত্রদলের সঙ্গে যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। ভদ্রতাকে কেউ যেন দুর্বলতা মনে না করেন, সম্প্রীতি বজায় রাখেন। আমরা সম্প্রীতির সাথে আছি, থাকবো।
মন্তব্য করুন