বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার প্রচার করেছে। সেই প্রেক্ষিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠনগুলো যে ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে তা ভারতীয় মিডিয়ার জন্য চপেটাঘাত।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২৪ এর দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
এসময় তিনি বলেন, আজকে আমার ভালো লেগেছে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রকাশ করেছে। এ আন্দোলনে সবার অংশগ্রহণ আছে। একজন মানবাধিকার কর্মী বলেছে- ঢাকার বাইরে কীসের আন্দোলন হয়েছে? এই ডকুমেন্টারিগুলো তার প্রমাণ। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রাণ ছিল মেয়েরা। আমি দেখেছি আন্দোলনে অনেক মেয়েরা অংশগ্রহণ করেছে, সামনে আসছে। কী অভূতপূর্ব আন্দোলন। সেই অনুযায়ী যদি নব্বইয়ের আন্দোলন দেখেন আপনি খুব কম মেয়ে পাবেন।
তিনি বলেন, আমি ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার ফ্যান। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা আমরা এখনো বুঝতে পারিনি। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার মাধ্যমেই স্টোরি টেলিং শেখা হয়। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা এই সুযোগটা তরুণ সাংবাদিকদের দেয়। আপনারা কুবিসাসকে বলবেন আপনাদের স্টোরিগুলো শেয়ার করতে। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা মানেই শোষণের শিকার। স্টোরি টেলিংয়ের মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাবেন। এটা নিজেকে খুঁজে পাওয়ার একটা ভালো মাধ্যমে। আপনারা শুধু ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ থাকবেন না। আমি আশাবাদী কুবিসাস বাংলাদেশের যতগুলো ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় যারা যারা এগিয়ে আছে তাদের মধ্যে ফ্রন্ট লাইনে থাকবে।
বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে নেত্র নিউজের চিফ এডিটর তাসনীম খলিল বলেন, কুবিসাসের নতুন দায়িত্বশীলরা খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেতৃত্ব নিচ্ছেন। ১ যুগ বাংলাদেশে কোনো স্বাধীন সাংবাদিকতা ছিল না। আপনারাই প্রথম নেতৃত্ব যারা নতুন করে স্বাধীন বাংলাদেশে, স্বাধীন গণমাধ্যম সৃষ্টির সুযোগ পাচ্ছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, আপনাদের স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করতে হবে। লেজুড়বৃত্তিক সাংবাদিকতা থেকে বের হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো অন্যায়ের পাশাপাশি ভুলভ্রান্তিও তুলে ধরতে হবে। এমন কি আমার ভুলগুলোও তুলে ধরবেন। আমি এটাই চাই। আমি ৬ মাস ক্যাম্পাসে এসেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ভালো ও মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষার্থী থাকার পরেও এই বিশ্ববিদ্যালয় এখনো সরকারি হিসেবে ২য় গ্রেডে রয়েছে। সেটা খুবই দুঃখজনক। আমি সাংবাদিকদের বলব- বিশ্ববিদ্যালয় কেন ২য় গ্রেডে গেল সেই রহস্য উদঘাটন করা হোক।
তিনি আরও বলেন, আপনাদেরকে এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখতে হবে। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করা যায় সে সম্পর্কে লেখালেখি করতে হবে। নতুন ক্যাম্পাসের যে অনিয়ম হয়েছে সেটিও উদঘাটন করতে হবে। যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত আছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
অনুষ্ঠানে কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২৪ এর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসানের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি জুবায়ের রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন ও সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ, শিবির সভাপতি ইউসুফ ইসলাহীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
মন্তব্য করুন