রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৫ বছরে প্রথমবারের মতো ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহের আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কে এম মুজিবুল হক।
এ সময় অধ্যক্ষ ডা. কে এম মুজিবুল হক বলেন, মেডিকেল শিক্ষা ভীষণ চাপের। পড়াশোনার চাপ মানসিক অবসাদ সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষাগ্রহণের পাশাপাশি যেন মানসিকভাবেও সজীব থাকে, তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়, শিক্ষার পরিবেশ আনন্দদায়ক থাকে; সে জন্য এমন আয়োজন জরুরি। এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের ওপর একাডেমিক চাপ কমানোর পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্যও কার্যকর।
এ সময় হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খোরশেদ আলম মজুমদার, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মেহেরুন্নেসা, হাসপাতাল উপ-পরিচালক ও হাসপাতাল শাখা ড্যাব প্রেসিডেন্ট ডা.মাসুদ আক্তার জিতু, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও শাখা ড্যাব সাধারণ সম্পাদক ডা. জিয়াউর রহামানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজন সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মশিউর রহমান বলেন, আমরা আনন্দিত। হলি ফ্যামিলিতে এ ধরনের আয়োজন আগে কখনো হয়নি। এটি আমাদের ছেলেমেয়েদের নতুন পরিবেশ দেবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অ্যাকটিভিটি তাদের মধ্যে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাবে।
অর্থপেডিকস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বাবু বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা একটা নতুন পরিবেশ পেয়েছি। আমার মনে হচ্ছে পুরোনো গুমোট পরিবেশ কেটে যাচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষার্থীই যাতে নিজের সুবিধামতো সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারে, সেই পরিবেশ গড়ে উঠছে।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মেডিকেল কলেজের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরান সালেহীন কালবেলাকে বলেন, ছাত্র হিসেবে আমার পড়াশোনা শেষ হতে চলল, কিন্তু এমন আয়োজন আগে কখনো দেখিনি, যার মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা শাণিত হবে, সম্প্রীতি বাড়বে। উল্টো সর্বক্ষণ ক্যাম্পাসে একটা চাপা উত্তেজনা, একটা ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করত। ফলে সব সময়ই আমাদের যেন ট্রমার মধ্যে থাকতে হতো। আমার মনে হচ্ছে এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বেশ স্বস্তি অনুভব করছি।
প্রসঙ্গত, পাঁচ দিনব্যাপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহের এই আয়োজনে ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, ক্যারাম, টেবিল টেনিস, দাবা, লুডু খেলা ছাড়াও নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদি আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মেডিকেল কলেজটির ইতিহাসে প্রথমবারের সাংস্কৃতিক আয়োজন।
মন্তব্য করুন