বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিআইইউ) স্প্রিং সেমিস্ট্রার-২০২৪, ফল সেমিস্ট্রার-২০২৪ ও স্প্রিং সেমিস্ট্রার-২০২৫ এর ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসাইন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর সাইয়েদ কামালুদ্দীন আবদুল্লাহ জাফরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক, অধ্যাপক আবদুল হাই শিকদার, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান, সাইয়্যেদ শহীদুল বারী, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. বিএম শামসুল হক।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যতম সদস্য মো. মিজানুর রহমান, সাইয়েদ জারীর জাফরী, রেজিস্ট্রার ড. মো. সোহেল আল বেরুনী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর শের মোহাম্মাদ, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর সুলতান আহমদ, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. গোলাম রসূল, ইসলামীক স্টাডিজ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর এম মানসুরুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আব্দুল মান্নান, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সাজ্জাদুল ইসলাম রিপনসহ সব বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসাইন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন যে, নৈতিকতার শিক্ষায় সবার আগে রয়েছে বিআইইউ। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে নীতি নৈতিকতাকে পুরো ধ্বংসের নানাবিধ ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। নৈতিকতার শিক্ষা অর্জনের মধ্য দিয়েই কেবল অবৈধ সম্পদ অর্জনের চিন্তা দূর করা যায়। এজন্যই দেশে একটি আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা থাকা জরুরি।
তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আহ্বান, লেখাপড়ায় তোমরা শতভাগ মনোযোগী হও। মনে রাখবে ছাত্রজীবনে যে যতবেশি পড়ুয়া তার পরবর্তী জীবন ততবেশি সমৃদ্ধ সফল হবে এটাই সত্য। তারুণ্যের যে শক্তি যা জাতিকে পথ দেখায় তোমরা সে অবস্থানে রয়েছ। বিগত জুলাই বিপ্লবে তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশ উপলব্ধি করেছে। গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরেও আমরা বার বার পিছিয়ে গেছি।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলররা অনৈতিকভাবে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অপকর্ম করেছে যা সকলের জানা রয়েছে। সে অবস্থা থেকে ফিরে আসতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা হবেন সবার সম্মানের ব্যক্তি। ব্যক্তি ও দলীয় পছন্দের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে পুরো দেশের মেধাবীদের সুযোগ তৈরির চিন্তা করতে হবে। হৃদয় বড় করে সব মানুষের জন্য আপনাদের ভূমিকা রাখতে হবে। সব ভেদাভেদ ভুলে শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিতে নয় বরং মানবীয় চরিত্রে সবার তরে আপনাকে ব্যাকুল হতে হবে। এই ইউনিভার্সিটির উন্নয়নে যা যা করা দরকার আমি তা করার চেষ্টা করব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামালুদ্দীন আবদুল্লাহ জাফরী সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বলেন, মানবশিশু জন্মগ্রহণ করেই সবকিছু শিখে না। তার জন্য প্রয়োজন হয় সঠিক শিক্ষার। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হন তারা আমাদের কাছে ওই শিশুর মতোই। তাদের সঠিক শিক্ষা প্রদান আমাদের মূল লক্ষ্য। মানবিকতা, নৈতিকতা ও আদর্শের সঠিক জ্ঞান চর্চা করা আমাদের বৈশিষ্ট্য।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমাদের মূলনীতি একটাই পরস্পর কল্যাণের কাজে সহযোগিতা করা এবং অন্যায় অপরাধমূলক কাজে বাঁধা দেওয়া। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অত্যন্ত খোলামেলা পরিবেশে ও ঢাকা শহরের সবচেয়ে আদর্শ ক্যাম্পাস হিসেবে সুপরিচিত হয়েছে। ছেলে ও মেয়েদের ক্লাস আলাদা নেওয়া হয় এমন সুন্দর পরিবেশ পুরো দেশে কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই। এখানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সবাই খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
বিশেষ অতিথি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক, অধ্যাপক আবদুল হাই শিকদার বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন যে, দুর্নীতিবাজ মানুষের মোকাবেলায় বিআইইউ নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ তৈরিতে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষা দেওয়া হয় যা ইহকাল ও পরকালের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মোরাল এডুকেশনের অভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সংঘবদ্ধ ধর্ষক তৈরি হচ্ছিল। এজন্যই আদর্শিক শিক্ষার বিকল্প নেই।
ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. সোহেল আল বেরুনী। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক প্রফেসর সুলতান আহমেদ ভোট অব থ্যাংকস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর এবং ট্রেজারার কাজী আখতার হোসেন-এর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ১ম পর্বের সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। আলোচনা শেষে অনুপম সাংস্কৃতিক সংসদের উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
মন্তব্য করুন