বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মতিউর রহমান নামে দৈনিক মজুরিভিত্তিক এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম রানাকে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাবের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম রেজিস্ট্রার বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, কর্মচারী সৈয়দ মতিয়ার রহমানের সাথে মো. শহিদুল ইসলামের টাকার লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা চলছে। এছাড়াও প্রতারণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলছে বলেও জানা যায়। এসব অভিযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম রানার আপগ্রেডেশনও আটকে রেখেছে। এমন দুটি মামলার কপি ও আপগ্রেডেশন আটকে রাখার কাগজপত্র প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, আমার কাছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা পেত কর্মচারী মতিয়ার রহমান। টাকাটি ধার নিয়েছিলাম সুদের বিনিময়ে। সে টাকা অনেক আগেই আমি পরিশোধ করে দিয়েছি। তার একটি ব্লাঙ্ক চেকও আমার কাছে আছে। তারপরও সে আমার কাছে টাকা দাবি করে আসছে এবং হুমকি দিয়ে আসছে। আমার কাছে চাঁদা দাবি করছে এখন। সেজন্য এর আগে আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। তারপরও মতিয়ার আজকে অফিস চলাকালীন সময়ে সহকর্মীদের সামনে আমাকে লাঞ্ছিত, আঘাত ও জুতাপেটা করেছে।
এদিকে কর্মচারী সৈয়দ মতিয়ার রহমানের অভিযোগ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমার থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি আমার আত্মীয়স্বজন থেকে ধার করে তাকে টাকা দিয়েছি। পরে সে আমাকে মাত্র এক লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। তার এক আত্মীয় সিন্ডিকেট সদস্য আছে বলে দাপট দেখিয়ে চাকরির কথা বলে টাকাটা নিয়েছিল। এখন সেই টাকা আমাকে দিচ্ছে না, চাকরিও দেয়নি। আমাকে হেনস্তা করার জন্য জিডি করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছে। তবে জুতাপেটার ঘটনাটি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, টাকা চাইতে গিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
জুতাপেটার ঘটনা নিয়ে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার বাহাদুর জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। অফিস চলাকালীন সময়ে একজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই কাম্য না। ভুক্তভোগী বিচার চেয়ে আবেদন দিয়েছে, আমরা সেটি সুপারিশ করে রেজিস্ট্রারকে পাঠিয়ে দিয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীর বিচার করা হোক এটাই আমরা চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, জুতাপেটার ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগপত্রও পেয়েছি। উপাচার্যের সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন