এ দেশে প্রতিভাকে মূল্যায়ন করা হয় না দাবি করে দেশের আলোচিত পঞ্চব্রীহি ধানের আবিষ্কার ড. আবেদ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ে দেখা করতে হয় সচিবদের সঙ্গে, যার আমার কথা শুনে ঘুম আসে, শেষে চা-বিস্কিট খাইয়ে বিদায় করে দেয়।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে গ্লোবাল সাউথ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (জিএসএসআরসি) আয়োজিত ‘ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, আপনারা দেখে থাকবেন আমার পেটেন্টগুলো দেশের বাহিরে থেকে নিবন্ধনকৃত। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার আমাদের কোনো সাহায্য করেনি। অথচ এ গবেষণাটি করার জন্য আমার দেশের গ্রামের এলাকা বেছে নিয়েছি, যাতে আমার দেশ উপকৃত হয়। আমাদের দেশে কেউ ভালো কিছু করলে কেউ মূল্যায়ন করে না, কিন্তু আমাইটির পণ্ডিতেরা বললে খুব মূল্যায়ন করে।
এ সময় তিনি বলেন, কবিতা যেমন শুধু বাংলা বিভাগে যারা পড়ে তাদের জন্য নির্দিষ্ট না। সবাই লিখতে পারে। তেমনি বিজ্ঞানকেও জনসাধারণের হাতে তুলে দিতে চাই। আমরা ডেমোক্রেটাইজেশন অব ইনোভেশনে পঞ্চব্রীহি ধান উদ্ভাবন করেছি। এখন অন্যান্য ফসল যেমন জোয়ান, তিসি, বেগুন, ঢেঁড়স ইত্যাদি উদ্ভাবন করার চেষ্টা করছি, গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। গত বছর পিতৃহীন বীজ উদ্ভাবন করেছি। আমাদের এ উদ্ভাবন কার্বন ও মিথেন মিটিগেশনে অত্যন্ত সহায়ক।
এ সময় সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ড. আবেদ চৌধুরীর এ উদ্ভাবনকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কীভাবে আমরা সময়টাকে কাট করে ভবিষ্যতে প্রোডাক্টিভ করা যায় সে বিষয়ে কাজ করতে হবে। বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরীর হাত ধরে মূল থেকে ধান হওয়া বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে। পঞ্চব্রীহি ধান দেশের খাদ্যশস্যের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. সাবিনা শরমীন বলেন, বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরীর কথা শুনে তাকে কখনো মনে হলো সাহিত্যিক, কখনো সমাজবিজ্ঞানীও মনে হয়েছে। ধান কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে ওনার গবেষণা। আমরা তার মাধ্যমে উপকৃত হব।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ড. মো. আনিসুর রহমান এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন