জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমৃত্যু গণঅনশন শুরু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার নেতাকর্মীরা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন অনশনকারীরা। সর্বশেষ বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তারা অনশনরত আছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৮ শিক্ষার্থী গণঅনশন পালন করছেন। তারা হলেন- নৃবিজ্ঞান ৫০ ব্যাচের নাজমুল ইসলাম লিমন, সরকার ও রাজনীতি ৪৯ ব্যাচের নাহিদ হোসেন ইমন, মার্কেটিং ৫০ ব্যাচের মোহাম্মদ রায়হান, গণিত ৫০ ব্যাচের গালিব হোসেন, ম্যানেজমেন্ট ৫১ ব্যাচের নাদিয়া রহমান অন্বেষা, ইংরেজি ৫৩ ব্যাচের মোহাম্মদ আলী চিশতি, ম্যানেজমেন্ট ৫১ ব্যাচের মেহরাব তূর্য, আইন ও বিচার ৫১ ব্যাচের জাইবা জাফরিন এবং ভূগোল পরিবেশ ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুয়িদ মুহম্মদ ফাহিম।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র ছিল বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল ও যৌক্তিক সংস্কার করা। সেজন্য অনেককে রক্ত দিতে হয়েছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কোটা নিয়ে আবারও অনশনে বসতে হচ্ছে, যা হতাশা ও লজ্জার বিষয়। ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরিব কৃষক ও শ্রমিকের সন্তান। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিরতরে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমাদের আমৃত্যু অনশনে বসা।
অনশনরত ইংরেজি বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী বলেন, দেশের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। এজন্য দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু এ বৈষম্যমূলক পোষ্য কোটার কারণে অনেকে নামমাত্র নাম্বার পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, যার ফলে মেধাবীরা যোগ্য স্থান হারায়। ফলশ্রুতিতে, জাতি হিসেবে আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
আমরা চাই এ ধরনের অযৌক্তিক কোটা নিপাত যাক, মেধাবীরা তাদের মেধার ভিত্তিতে ক্যাম্পাসে আসার সুযোগ পাক এবং তাদের মেধা দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করুক।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বিদ্যমান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এ পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি। যেহেতু এ কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই, সেহেতু এটি সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। এটা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।
মন্তব্য করুন