ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অমর একুশসহ কোনো আয়োজনে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কাউকে না রাখার দাবি

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহ‌মেদ খান‌কে স্মারক‌লি‌পি‌ দিচ্ছেন সাদা দল। ছবি : কালবেলা
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহ‌মেদ খান‌কে স্মারক‌লি‌পি‌ দিচ্ছেন সাদা দল। ছবি : কালবেলা

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আয়োজন উদযাপনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রমে শিক্ষক সমিতির নামে কাউকে সম্পৃক্ত না করার দাবি জানি‌য়ে‌ছে ঢা‌কা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের (ঢাবি) বিএন‌পি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। সাদা দল বলছে, শিক্ষক সমিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের মর্যাদাহানী এবং ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠনকারী ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে কাজ করেছে।

রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম এবং অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত ঢাবি উপাচার্য অধ‌্যাপক ড. নিয়াজ আহ‌মেদ খান‌কে দেওয়া এক স্মারক‌লি‌পি‌তে এ দা‌বি জানা‌ন।

স্মারক‌লি‌পি‌তে নেতারা ব‌লেন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিরোধিতা এবং ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন শিক্ষক সমিতি এখনো নিজেদের বৈধ সমিতি হিসেবে দাবি করে গত ২৫ জানুয়ারি আপনার বরাবরে প্রেরিতপত্রের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। আমরা শিক্ষক সমিতির নামে দেওয়া এই পত্রের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।

তারা ব‌লেন, ২০২৪ সালের শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে নীল দল ছাড়া অন্যকোনো দল ও প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নীল দলের প্যানেলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। গত ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে পরিচালিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় অভ্যুত্থানবিরোধী অবস্থান এবং স্বৈরশাসকের পক্ষে নির্লজ্জ ভূমিকা পালনের জন্য গত আগস্ট মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল সমর্থক শিক্ষকরা বিনা ভোটে নির্বাচিত তৎকালীন শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করে। শুধু তাই নয়, স্বৈরশাসক খুনি শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও দেশ ছেড়ে তার পলায়নের ঠিক দু-দিন আগে গণভবনে উপস্থিত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় সাদা দল তৎকালীন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের বিচার দাবি করে। শিক্ষক সমিতির এই গণবিরোধী ভূমিকার জন্যে ইতোমধ্যেই সংগঠনটি একটি গণধিকৃত সংগঠনে পরিণত হয়েছে। দেশের বিবেকবান অনেক ব্যক্তিও ইতোমধ্যে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছে।

নেতৃবৃন্দ আরও ব‌লেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় উল্লেখ করতে চাই, শিক্ষক সমিতির নামে দেওয়া পত্রে ২০০৭ সালের যে দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে তা দেখিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসর এই শিক্ষক সমিতিকে বৈধ শিক্ষক সমিতি হিসেবে দাবি করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সেই সময় শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব চলমান রাখা হয়েছিল শিক্ষকদের সর্বসম্মত সমর্থনের ভিত্তিতে। তাছাড়া সে সময়কার শিক্ষক সমিতির অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা কেবল শিক্ষক সমাজের কাছেই নয়, গোটা জাতির কাছে ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু বৈধ শিক্ষক সমিতি হিসেবে দাবিদার তথাকথিত এই শিক্ষক সমিতি ইতোমধ্যেই শিক্ষকগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত ও দেশবাসী কর্তৃক নিন্দিত হয়েছে।

শিক্ষক সমিতির শা‌স্তি ও অমর একুশের আ‌য়োজ‌নে শিক্ষক স‌মিতি‌তে সম্পৃক্ত না করার দা‌বি ক‌রে তারা ব‌লেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের মর্যাদাহানী এবং ঐতিহ্যকে ভুলণ্ঠনকারী ফ্যাসিস্টের দোসর এই শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বের দাবিকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একই সাথে শিক্ষক সমিতির পরিচয় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও তাদের গণবিরোধী ভূমিকা এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রতি অব্যাহত সমর্থনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সা‌থে অমর একুশের আয়োজন উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রমে শিক্ষক সমিতির নামে কাউকে সম্পৃক্ত না করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি অমর একু‌শের কার্যক্রমে শিক্ষক স‌মি‌তি‌কে সম্পৃক্ত করার দা‌বি জা‌নি‌য়ে বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহ‌মেদ খান‌কে স্মারক‌লি‌পি প্রদান ক‌রে ঢা‌বি শিক্ষক সমিতি।

সেখা‌নে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ব‌লেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যগতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রধান সমন্বয়ক এবং শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যুগ্ম সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে আসছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মহান ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পালনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বাদ দিয়ে আপনার কার্যক্রম শুরু করেছেন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের চুয়ান্ন বছরের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা কখনই ঘটেনি। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাথে সমন্বয় সাধন করে মহান মাতৃভাষা দিবস পালনের কর্মসূচি গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফা : ২০২৫ সালে কোন স্কিমে আপনি কত পাবেন

রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যা জানা গেল

রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যা জানা গেল

নিকাব নিষিদ্ধ করল এক মুসলিম দেশ

এবার বড় যুদ্ধের হুঁশিয়ারি ইরানের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন / রূপনগর থানা কমিটি থেকে মারুফের পদত্যাগ

নিখোঁজের দুই দিন পর পুকুরে ভেসে উঠল তানজিমের লাশ

বিএনপি নেতা স্বপনের পদ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার

ডাক্তার না হয়েও করতেন অপারেশন, অতঃপর...

ডিমের খোসা ভাগ্য বদলে দিল তরুণের

১০

লালগালিচার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল ডিএনসিসি

১১

সড়ক অবরোধ / সরকারকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় দিলেন অভ্যুত্থানে আহতরা

১২

তিতুমীর কলেজ নিয়ে মুখ খুললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

১৩

ঢাবির সংগ্রহশালায় যুক্ত হলো শহীদ আবু সাঈদ ও ওয়াসিমের ব্যবহৃত জিনিসপত্র

১৪

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কমিটি গঠন স্থগিত

১৫

নোয়াখালী জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

১৬

আরডিআরসির চেয়ারম্যান এজাজকে ডিএনসিসির প্রশাসক নিয়োগের সুপারিশ

১৭

কুমিল্লা জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন

১৮

মাগুরা জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন

১৯

রমজান ও ঈদের তারিখ ঘোষণা করল কাজাখস্তান

২০
X