বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য, নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও শিক্ষক আহত হয়েছেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে আইন ও আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে আসা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার একটি বাসে জ্যাকেট দিয়ে অন্যদের জন্য সিট ধরেন আল-ফিকহ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী। তবে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমন অভ্র ওই সিটে বসলে তাদের সঙ্গে সুমনের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ওই বাসে থাকা আল-ফিকহ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সিহাব ও রাকিব বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে সুমন রাকিবের শার্টের কলার ধরে। এ সময় তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে সুমনের মুখে আঘাত লাগে। তবে সুমনের দাবি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার মুখে আঘাত করে রাকিব।
বিষয়টি মুঠোফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানকে জানায় সুমন। একই সঙ্গে তিনি বিষয়টি তার বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও জানান। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে পৌঁছলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে বাসটি আটকে দেন। পরে তারা বাসের সামনের গ্লাস ভাঙচুর করেন। এরপর সেখানে আল-ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত হয়।
পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য রাত ১০টার দিকে উভয় বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রক্টরিয়াল বডি। এ দিকে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনুষদ ভবনের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। আলোচনা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের জানান প্রক্টর। এরপর চলে যাওয়ার সময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আল-ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ‘সন্ত্রাসী’ বলে। এ নিয়ে অনুষদ ভবনের সামনে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
এ সময় আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানকে ধাক্কা দেয়। আল-ফিকহ্ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ঝাল চত্বরে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীদের থামাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আহত হন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ দিকে প্রক্টর ও আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আজ রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং আছে। সেখানে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন