ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রজ্ঞাপন জারিসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।
তাদের অভিযোগ যৌক্তিক দাবি নিয়ে দ্বিচারিতা করছে সরকার, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
তারা বলেন, সরকার তাদের আন্দোলন ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আন্দোলন থেকে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। আন্দোলন করতে গিয়ে কেউ অসুস্থ কিংবা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
এর আগে, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তিতুমীর কলেজের একদল শিক্ষার্থী। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার পর কলেজটির মূল ফটকের সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় তারা ৭ দফা দাবি জানান।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে ঘটনাস্থলে আসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। তিনি দীর্ঘক্ষণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন, কিন্তু কোনো সমাধানে আসতে পারেননি। শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ করার তাৎক্ষণিক ঘোষণার দাবি জানান। একপর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান যুগ্ম সচিব।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত। আশা করা যায়, সরকার খুব শিগগিরই দাবিগুলো মেনে নেবে এবং তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু করবে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্যে সাত দফা দাবি তুলে ধরে। তিতুমীর ঐক্যের সাত দফা হলো—তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা। শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ল এবং জার্নালিজম সাবজেক্ট সংযোজন।
এ ছাড়াও আছে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষার গুণমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচির পর কলেজটির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন