রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী শিমুল মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী রাজশাহী কলেজ প্রশাসন ভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিক্ষোভ মিছিলটি কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
নিহত শিমুল কলেজের ডিগ্রী প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি রাজশাহী নগরীর মেহেরচন্ডি বুধপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের ছেলে।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ’প্রক্টরের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে', ‘তুমি কে, আমি কে, বহিরাগত, বহিরাগত’, ’বিচার চাই, বিচার চাই, শিমুল হত্যার বিচার চাই’, ‘আয় প্রক্টর দেখে যা, রাজপথে তোর বাপেরা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনিরা কেন বাইরে’?, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটা শিক্ষার্থীকে হত্যা করা মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ড শুধু শিমুলের পরিবারকেই নয়, পুরো ছাত্রসমাজকে শোকাহত করেছে। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই। পাশাপাশি এই মৃত্যুর পেছনের মূল ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
বিক্ষোভে একাত্মতা ঘোষণা করে রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী শিমুলকে প্রক্টর নিজে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এতে আমরা রাজশাহী কলেজের সকল শিক্ষার্থী প্রতিবাদ জানাই। এখন পর্যন্ত এ ঘটনার কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাই নি। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছি, এখন প্রতিদিন চলবে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাস জিরো পয়েন্ট, মণি চত্ত্বর, রাজশাহী কলেজ পার হতে দিবো না। যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিসি ক্যামেরা দেখে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এদিকে শিমুল মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি। এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, শিমুল মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা শনিবার রাতের মধ্যে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গুরুতর আহত হলে অবস্থায় শিমুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, হত্যা নয়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে শিমুল মারা গেছেন। তবে শিমুলের স্বজন ও সহপাঠীদের দাবি, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন