সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ ভাতা বৃদ্ধি ও বৈষম্য দূরীকরণের পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন। দাবি আদায়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না পেলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষদ ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় তারা ‘ইউজিসি কে খবর দে, বৈষম্যের কবর দে, অন্যরা পায় ২০ হাজার, আমরা কেন ৯ হাজার, অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, বৈষম্য যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
ভেটেরিনারি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. জিহাদুল ইসলাম শিঞ্জন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের বলেছে উনারা ইউজিসির সাথে বৈঠক করে আমাদের ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে কথা বলবেন। আমরা প্রশাসনকে সময় দিতে রাজি আছি। তবে সেক্ষেত্রে আমাদের দ্বিতীয় দফা দাবি অর্থাৎ দৈনিক ভাতা (টিএ/ডিএ) যেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে দিতে পারে। এ দাবিটি প্রশাসন মানলে এবং লিখিতভাবে দিলে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাস পরিক্ষায় বসতে রাজি আছি। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা দুদিন ধরে আন্দোলন করছি। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছে। এভাবে চললে আমরা কাল অনুষদ ভবনের তালা দেব।
এর আগে, পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার থেকেই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করে সিকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের পাঁচ বছরের ডিগ্রির মধ্যে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করতে হয়। ইন্টার্নশিপ চলাকালে মাসিক মাত্র ৯ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া, যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা করে ভাতা দিয়ে থাকে। সমসাময়িক অনেক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের তুলনায় সিকৃবির শিক্ষার্থীরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ইন্টার্নশিপ ভাতা ৯ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা, ইন্টার্নশিপ সময়কালে প্রতি কার্যদিবসের যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ বাবদ দৈনিক ন্যূনতম ৩শ টাকা ভাতা প্রদান, কমপক্ষে চার মাসের ইন্টার্নশিপের জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রদান, ঢাকায় অবস্থানের সময় দুই মাসের মধ্যে সীমিত রাখা, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এক্সটার্নশিপের জন্য ভারতের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশে সুযোগ সৃষ্টি, ইন্টার্নশিপের সম্মানী প্রতিমাসে নিয়মিত পরিশোধ করা।
এ বিষয়ে ভেটেরিনারি, এনিম্যাল ও বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একমত। তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করবো। আলোচনার জন্য আমাদের সময়ের প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন