জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সংস্কারের মাধ্যমেই নিউ মডেলের বাংলাদেশ সম্ভব : শিশির মনির

‘নাগরিক দায়িত্ব ও আইনের শাসন’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি : কালবেলা
‘নাগরিক দায়িত্ব ও আইনের শাসন’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি : কালবেলা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আসা সংস্কার প্রস্তাবনা কার্যকরের মাধ্যমে নিউ মডেলের বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়ামের (আইআরডিসি) আয়োজনে ‘নাগরিক দায়িত্ব ও আইনের শাসন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ সব কথা বলেন।

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, যে কোনো দেশের জন্য আইনের শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের গণতন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পায়। আইনের শাসনে বিশ্বাস করলে রাষ্ট্রে অনৈতিক কর্মকাণ্ড রোধ করা সম্ভব। ‘জনগণের ক্ষমতাই সবচেয়ে বড়’ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই সত্য মেনে নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারকে আইনের শাসনে পরিচালিত করতে হলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণ সচেতন না হলে আবারও অনৈতিক সরকারের অভ্যুত্থান ঘটতে পারে।

শিশির মনির বলেন, একজন শিক্ষককে যাচাই করবে ছাত্ররা। শিক্ষকদের চ্যালেঞ্জ করার মতো ছাত্র যেখানে থাকবে, সেখানে শিক্ষকরা অধিকতর সচেতন হবে। ছাত্র শিক্ষকের চেয়ে বেশি জানতে পারে। শিক্ষক-ছাত্র, আইনজীবী সবাই সবাইকে প্রশ্ন করতে হবে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না। কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিপক্ষে যদি ছাত্ররা না দাঁড়াতেন তাহলে আমরা এখন যা করছি কেউ তা করতে পারতাম না। তাহলে বুঝেন সিটিজেনে ক্ষমতাটা কোথায়?

প্যানেল আলোচনায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রইছ উদ্‌দীন বলেন, নাগরিকের মধ্যে নৈতিকতা না থাকায় আইনের প্রতিফলন সমাজে আসেনি।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহ আমাদের সর্বোত্তম জাতি হিসেবে তৈরি করেছেন। কিন্তু আমাদের যে দায়িত্ব সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ সেটা আমরা করতে পারিনি বলেই সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর ফ্যাসিবাদকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হতো যদি আমরা সঠিকভাবে প্রতিবাদ করতাম। আইনের বাস্তব প্রয়োগ না হওয়ার কারণে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি।

আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সাদী বলেন, এত বছর আইন প্রয়োগ করা হলেও মূলত দেশে সঠিক আইন ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করেছে, যা রাষ্ট্রের আইনি কাঠামোকে দুর্বল করেছে। প্রতিটি দেশের আইন হবে সে দেশের কালচার অনুযায়ী, আমাদের দেশ গণতান্ত্রিক হলেও সঠিক নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি আর এজন্য সংবিধান সংশোধন করা আবশ্যক। নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব বর্তমান সরকারকে সংস্কারে সহযোগিতা করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেজবাহ উল আজম সওদাগর বলেন, আইনের শাসন না থাকলে ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও অযোগ্যতার ওপর সবকিছু নির্ভর করে। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে, ব্যক্তি ক্ষমতা কমাতে হবে। তাহলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

অনুষ্ঠানটির শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইআরডিসির প্রেসিডেন্ট ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এবং সঞ্চালনা করেন আইআরডিসির জেনারেল সেক্রেটারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। এ সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে’

আদালতে টিস্যু পেপারে কাকে চিঠি লিখলেন দীপু মনি?

সাভার কর্ণপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূমের মহাসম্মেলন আগামীকাল

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান অনুপ কুমার চাকমা

জেবিএবির উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

কেবিনে ধোঁয়া, মাঝ আকাশে অল্পের জন্য রক্ষা পেল বিমান

সাফারি পার্কের দেয়াল টপকে পালিয়েছে নীলগাই, অতঃপর...

মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি, জনপ্রিয় গায়ককে যে শাস্তি দিল ইরান

মেয়াদ বাড়ল ৬ সংস্কার কমিশনের

‘সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা জনগণ মানবে না’

১০

মানুষকে স্বস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হচ্ছে : আমিনুল হক 

১১

ব্যাটারি গলি থেকে সাবেক শ্রমমন্ত্রীর ছেলে গ্রেপ্তার

১২

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন শুরু মঙ্গলবার 

১৩

সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী দিল ছাত্রদল নেতা জাফর

১৪

‘সাংবাদিকদের ছুটি ২ দিন, ন্যূনতম বেতন ৫০ হাজার টাকা হওয়া উচিত’

১৫

মুক্ত তিন ইসরায়েলি পণবন্দির হাতে ‘গিফট ব্যাগ’, কী উপহার দিল হামাস?

১৬

পার্কে ছাত্র-ছাত্রীদের বিয়ে ‘কাঠগড়ায়’ মাতব্বররা

১৭

প্যারিসে ‘জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ’ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

১৮

ডিএমপির ১৩ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইউনিটে পদায়ন

১৯

আরেক অঞ্চলে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর

২০
X