জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তারা এই বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি কলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে বিজ্ঞান ভবন প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় তারা ‘প্রক্টরের রক্ত ঝরে, প্রশাসন কীর্তি করে’, ‘শিক্ষকের অপমান সইবে নারে জবিয়ান’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দেয়।
এ দিন বিক্ষোভ শেষে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী দ্রুত বিচার ও ৪ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আইজিপি বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।
স্মারকলিপিতে হামলার ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নিষিদ্ধ সংগঠন জবি ছাত্রলীগের নেতা ও ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী শিশিরের উপস্থিতি ও আরও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে ৪ দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো- ১. আগামী ৭ দিনের মধ্যে হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। ২. জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বাবস্থা করা। ৩. পতিত স্বৈরাচারের দোসর যেসব শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাকে ট্রল করে বিভিন্ন ধরনের অশোভন মন্তব্য করছে তাদেরও চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৪. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অত্র এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে রায়সাহেব বাজার মোড়ের পরে পাবলিক পরিবহন (বাস ও লেগুনা) প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
৭ দিনের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা না হলে তারা কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম আন নুফাইস বলেন, জবি প্রক্টরের ওপর যে ষড়যন্ত্রমূলক হামলা চালানো হয়েছে তা একেবারেই দুঃখজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রক্টরকে এভাবে হামলা করা আমরা কোনোভাবেই স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখছি না। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে যথোপযুক্ত বিচার দাবি করছি। আমরা আইজিপি বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছি, তাতে আমাদের দাবি-দাওয়া উল্লেখ করেছি। এর বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমরা আমাদের এবং আমাদের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তাজনিত ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারব।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইচ উদ্দিন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
প্রসঙ্গত, গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে বংশাল থানায় নিয়ে আসে। ওই ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
আজ প্রক্টরের গাড়িচালক শ্যামল কুমার দাস বাদী হয়ে বংশাল থানায় একটি মামলা করেন।
মন্তব্য করুন