প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও বিভিন্ন ছাত্রলীগ নেতাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ৩টায় টিএসসি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস রাইটস ওয়াচ’ নামে এক প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা- শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সেক্রেটারি তানভীর হাসান সৈকত, রোকেয়া হলের সভাপতি আতিকা বিনতে হুসাইনের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করেন। পরে তাদের কুশপুত্তলিকা ও গেস্টরুম, গণরুম, ভাইটাল প্রোগ্রাম নামে নির্যাতনের অন্যতম অনুষঙ্গও দাহ করা হয়।
এসময় তাদের ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘আমার সোনার বাংলায়, মুজিববাদের ঠাঁই নাই/ স্বৈচারের ঠাঁই নাই’, ‘হাসিনা/সাদ্দাম/কাদের/শয়নের গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, ছাত্রলীগ গেলি কই?’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিকেল সোয়া ৩টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাশে আওয়ামী-ছাত্রলীগের নেতাদের ছবি সংবলিত ব্যানার টানানো হয়। এসময় একদল শিক্ষার্থী সেখানে জুতা মারার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৩টি জুতা একসঙ্গে নিক্ষেপ করার সুযোগ পান। কেউ যদি জুতা নিক্ষেপ করে টানা ৩ বার ব্যানারের নেতাদের গায়ে লাগাতে পারেন তাহলে তাকে পুরস্কার স্বরূপ একটি ‘মোজো’ দেওয়া হয়।
প্রতিযোগিতার আয়োজক শিক্ষার্থীরা বলেন, সাবেক স্বৈরাচার সরকার দেশের মানুষের ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে তার হিসাব নেই। এখন সে জীবন বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে গেলেও আমরা সেই ক্ষতচিহ্ন বুকে বয়ে বেড়াচ্ছি। সেজন্য আমরা আজকে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শেখ মুজিব, হাসিনাসহ সকল নেতাদের ছবিতে গণজুতা মারা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আমরা চাই, এই দিনটি ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকুক। মানুষ জানুক স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহসমন্বয়ক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা একসময় হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ন্যক্কারজনক কাজ করেছে। তারা রাতে বলত, আগামীকাল ভাইটাল প্রোগ্রাম আছে, কেউ অনুপস্থিত থাকলে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হবে। সন্ত্রাসীরা আমাদের ক্লাস পরীক্ষা করতে দিত না। আমাদের দাসপ্রথার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল তারা। আমরা সন্ত্রাসীদের ছবিতে জুতা মারার পাশাপাশি, গেস্টরুম, গণরুম, ভাইটাল প্রোগ্রাম, আধিপত্যবাদ, লেজুড়বৃত্তি, ফ্যাসিবাদ, মুজিববাদের টার্মের কবর রচনা করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের খুনিরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকারকে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশাসনের ফ্যাসিবাদদের চাকরিচ্যুত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যারা শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন