রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা ইস্যুতে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে তিন দিন কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমকে তিন দিনের কর্মবিরতির কথা জানিয়েছেন অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন।
প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে একদিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিসহ ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সিদ্ধান্তকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা ফেরত চাই। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমরা ৩ দিনের কর্মসূচি দিয়েছি। আগামী ৬ জানুয়ারি মানববন্ধন, ৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে ২ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি এবং ৮ জানুয়ারি আমরা সর্বাত্মক কর্মসূচি পালন করব। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আলাপ আলোচনার বিকল্প নেই। বিষয়টি সমাধানে আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গেই কথা বলব। কারণ এ ধরনের কর্মসূচি পালিত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই না আমাদের কোনো শিক্ষার্থীর ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ হোক।’
উল্লেখ্য, বুধবার (০১ জানুয়ারি) রাবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটার হার পুনঃনির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নতুন প্রশাসন সেই কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরপরই কয়েকজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে ২০ সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও প্রায় দেড় মাস পর বুধবার বিকেলে এ নতুন সিদ্ধান্ত জানায় প্রশাসন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা সার্বিকভাবে বাতিলসহ তিন দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া কোটা বাতিল না হলে আগামী রোববার থেকে কমপ্লিট শাটডাউনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মন্তব্য করুন