থার্টি ফার্স্ট নাইটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রাতভর অভিযানে মাদকদ্রব্য সেবনরত অবস্থায় ৯ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পাশের সুন্দরবন এলাকা থেকে তাদের আটক করে প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তারক্ষীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছে মাদকদ্রব্য পাওয়া যায় এবং তাদের অনেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় ছিল বলে প্রশাসনের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তারা।
এর আগে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি নোটিশের মাধ্যমে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৩১ ডিসেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ হলে রাত ১০টার মাঝেই ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে রাতভর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তৎক্ষণাৎ সেখানে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করে প্রক্টরিয়াল টিম।
অভিযানে আটক শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ইনস্টিটিউটের ৫১ ব্যাচের মো. শিপন হোসেন ও সতীর্থ বিশ্বাস বাঁধন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের প্রিয়ন্তী নাগ এবং উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের (ফল-২০২৩) আফরিন আক্তার আশা। এদের প্রত্যেককে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকদ্রব্য সেবনরত অবস্থায় আটক করে।
অপর গ্রুপের শিক্ষার্থীরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের হ্রই মুইং স্যাং মারমা এবং কৃষন চন্দ্র বর্মন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের শিক্ষার্থী খেংচেংফ্রু মারমা, পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউটের থোয়াইনুপ্রু এবং প্রাইম নার্সিং কলেজের মাসুই মারমা। এদের কাছেও মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ অভিযান সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছি। আমরা ৩১ ডিসেম্বর থার্টি ফার্স্ট নাইটে ক্যাম্পাসের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সব শিক্ষার্থীকে রাত ১০টার মধ্যেই নিজ নিজ হলে ফেরার নোটিশ দিয়েছিলাম। ক্যাম্পাসে সব বহিরাগতদের প্রবেশ আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছি। নোটিশে উল্লেখ করা এসব বিষয় তদারকি করতেই আজকে রাতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করি। আমরা সুন্দরবন এরিয়ায় গেলে সেখানে শিক্ষার্থীদের দুটি গ্রুপকে মাদক সেবনরত অবস্থায় ধরতে সক্ষম হই।’
আটক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে প্রক্টর বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা সবার পরিচয় সরবরাহ করেছি এবং সবার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়েছি ও সব ধরনের প্রমাণ জোগাড় করেছি। এখন আমরা এসব বিষয়ে আরও গভীরভাবে পর্যালোচনা করে প্রমাণ সাপেক্ষে খুব দ্রুতই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
মন্তব্য করুন