বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেতরে তৈরি হবে চার লেনের রাস্তা। রাস্তাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হয়ে আব্দুল জব্বারের মোড় দিয়ে যাবে। এতে বৃক্ষ নিধনে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রশাসন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বৃক্ষ নিধনের কাজ। প্রথমে শুরু হয় রাস্তার চারপাশে থাকা বড় বড় কৃষ্ণচূড়া গাছ কাটার মাধ্যমে। বিভিন্ন সংগঠন এ সময় প্রতিবাদ ও মানববন্ধনও করে। কিন্তু গাছ কাটা তো বন্ধ হয়নি, নতুন করে আরও ৬০টি গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
চার লেনের রাস্তা করায় আব্দুল জব্বার মোড়ে অবস্থিত দোকানগুলো সরাতেই গাছ কেটে জায়গা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় নানা সমালোচনা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে আব্দুল জব্বারের কাছে গাছ কাটার স্থানে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, ভবন নির্মাণের নামে গাছ কেটে ফেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক আমবাগান আজ প্রায় মৃত। দেড় শতাধিক গাছের মধ্যে প্রায় ৩০টি গাছ ছাঁটাইয়ের ফলে সেগুলো এখন মৃত প্রায়। এখন ক্যাম্পাসের প্লাটফর্মের পাশের জায়গা এবং আব্দুল জব্বার মোড়ের কাছে জিমনেশিয়ামের সামনের জায়গাগুলোও গাছগাছালিতে পূর্ণ ছিল। কিন্তু বর্তমানে দোকানপাট স্থানান্তরের নামে কাটা হচ্ছে বড় কড়ই গাছ। সব মিলিয়ে গত তিন মাসে শতাধিক গাছ কাটা পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামের সামনে এবং আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন মাঠ ফাঁকা রয়েছে। কিন্তু বড় বড় গাছ কেটেই কেন করতে হবে দোকান বসানোর জায়গা। আর বিশ্ববিদ্যালয় তো কোনো বাণিজ্যকেন্দ্র না।
এ বিষয়ে গ্রিন ভয়েসের সভাপতি মো. বকুল আলী বলেন, বৃক্ষনিধনের বিরুদ্ধে আমরা আগে মানববন্ধন করেছি। কিন্তু সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। এমনকি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি, বাংলাদেশের বিখ্যাত প্রকৌশলী স্থপতি ইকবাল হাবিব স্যারকে নিয়ে গাছের নিচে দোকানের প্ল্যান করে দিচ্ছি, আপনারা বৃক্ষনিধন বন্ধ করুন। কিন্তু প্রশাসন বলেছে, এটার প্ল্যান হয়ে গেছে ও গাছগুলো বিক্রি করা হয়ে গেছে, তাই এটা এখন বন্ধ করা সম্ভব না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন আচরণে আমরা খুবই হতাশ হয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমি শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে পরিদর্শন করব। সেখানে সবার সঙ্গে কথা বলে দোকানগুলো কোথায় স্থানান্তর করলে ভালো হবে তা আলোচনা করা হবে।
মন্তব্য করুন