স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। দেশের বেসরকারি ইউনিভার্সিটির মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে সাফল্যের সহিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইউনিভার্সিটিটি। এরই মধ্যে অসংখ্য শিক্ষার্থী এখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে। আবার অনেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাহিরে পারি জমিয়েছেন।
ইউনিভার্সিটিটি দিন দিন তাদের কার্যক্রম আরও সমৃদ্ধি করছে। শিক্ষার্থীদের ভালো পড়াশোনার পাশাপাশি দিচ্ছে নানা সুবিধা। বলা যায় দেশেই বিশ্বমানের শিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে এই ইউনিভার্সিটি।
শুধু শিক্ষা না অন্যান্য এক্টিভিটিজের দিক থেকেও পিছিয়ে নেই ইউনিভার্সিটি। ল্যাব, রিসার্স সেন্টার ও বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে সেখানে। এজন্যই বেসরকারিতে ভর্তির সময় অনেকের পছন্দের তালিকায় থাকে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি
সাফল্যের কারণ:
শিক্ষার্থীদের গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদান। ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক ট্রাইমিস্টার থেকে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান। যুগোপযোগী আউটকাম পদ্ধতিতে কারিকুলাম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণা ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদান। শিক্ষাদানের গুণগত মানোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সেমিনার ওয়ার্কশপ সেমিনার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্টামফোর্ডে ও বাইরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নির্দিষ্ট স্থানে যোগ্যতা সম্পন্ন লোক কাজ করছে। প্রত্যেকে যে যার দায়িত্ব নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়ে করে যাচ্ছে।
ভূমিকা :
গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড এডুকেশন-এর কনসেপ্ট নিয়ে প্রফেসর ড. এম.এ হান্নান ফিরোজ ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষা ও শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্য নিয়ে স্টামফোর্ড কলেজ গ্রুপের যাত্রা শুরু করেন। ২০০২ সালে জানুয়ারি মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে যাত্রা শুরু করে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার ফলে ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন’ স্টামফোর্ডকে প্রথমসারির ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিভার্সিটি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বাংলাদেশে আইএসও-৯০০১-২০০০ স্বীকৃতি প্রাপ্ত প্রথম ইউনিভার্সিটি।
আন্তজাতিক র্যাংঙ্কিং (অর্জন):
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি এবং কিউএস এশিয়া ২০২৫ র্যাংঙ্কিং এ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪তম এবং সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধে ৬ষ্ঠতম অবস্থানে থাকার গৌরব অর্জন করে। এছাড়াও কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি এবং কিউএস এশিয়া ২০২৪ র্যাংঙ্কিং দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫তম এবং সব বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের মধে ৭মতম অবস্থানে ছিলো।
ডিগ্রীপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা:
শুরু থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্টামফোর্ড সর্বমোট ৩৪,৯৯৫জন ছাত্র-ছাত্রীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেছে, তন্মধ্যে ২০২৩ সালে প্রায় ১ হাজার ৪৩৯ জন ছাত্র-ছাত্রীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রীপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীরা পাঠ শেষ করে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে কর্মরত আছে।
বিভাগ সমূহ:
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্যে নিত্য-নতুন বিষয় চালু করছে। বর্তমানে পাঁচটি অনুষদে ১৪টি বিভাগের অধীনে মোট ২৯টি প্রোগ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। প্রোগ্রামগুলো হলো: ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার, বি.এসসি. ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বি.এসসি. ইন ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বি.এসসি. ইন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এম.এসসি. ইন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, মাস্টার ইন কম্পিউটার এপ্লিকেশন, ব্যাচেলর অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, এম.এসসি. ইন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, বি.এসসি. ইন মাইক্রোবায়োলোজি, এম.এস ইন মাইক্রোবায়োলোজি, ব্যাচেলর অব ফার্মেসি, মাস্টার অব ফার্মেসি, ব্যাচেলর অব ল, মাস্টার অব ল, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মাস্টার অব সায়েন্স ইন বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, ব্যাচেলর অব আর্টস ইন ইংলিশ (অনার্স), মাস্টার্স অব আর্টস ইন ইংলিশ (ফাইনাল), মাস্টার অব আর্টস ইন ইংলিশ (প্রিলিমিনারি ও ফাইনাল), বি.এস.এস. ইন ইকনোমিক্স, এম.এস.এস. ইন ইকনোমিক্স, বি.এস.এস.ইন জার্নালিজম ফর ইলেকট্রনিক এন্ড প্রিন্ট মিডিয়া, এম.এস.এস ইন জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিস, এম.এস.এস ইন জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিস, ব্যাচেলর অব আর্টস ইন ফিল্ম এন্ড মিডিয়া, মাস্টার অব আর্টস ইন ফিল্ম এন্ড মিডিয়া, মাস্টার অব আর্টস ইন ফিল্ম এন্ড মিডিয়া, ব্যাচেলর অব পাবলিক অ্যাডমিন্সিট্রেশন, মাস্টার্স অব পাবলিক অ্যাডমিন্সিট্রেশন এবং জাপান ল্যাগুয়েজ কোর্স।
এছাড়া ইউজিসি’র অনুমোদিত থিয়েটার স্টাডিজ, এপ্লাইড নিউট্রিশন এন্ড ফুড টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনলজি বিষয়গুলো অতিসত্ত্বর চালু করা হবে।
ল্যাব সমুহ
তাত্ত্বিক পড়ার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে স্থাপন করেছে ৩৭টি সুসজ্জিত বিভাগ ভিত্তিক ল্যাব। এর মধ্যে ৪টি ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ল্যাব, ৭টি ফার্মেসি ও মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, ৫টি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব, ৬টি কম্পিউটার সায়েন্স ল্যাব, ১০টি আর্কিটেকচার ডিজাইন ও ড্রইং ল্যাব, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, এছাড়াও ফিল্ম এন্ড মিডিয়া ডিপার্টমেন্টের ৫টি ভিডিও এডিটিং ল্যাব এবং ৮টি প্রফেশনাল ক্যামেরা।
লাইব্রেরি:
শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য স্টামফোর্ডে রয়েছে ৪৭,১২৮ হাজার বই এবং ৫৬৬২ হাজার জার্নাল ও ম্যাগাজিন সম্বলিত ৫টি লাইব্রেরি ও ৫টি সেমিনার লাইব্রেরি।
রিসার্চ সেন্টার:
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ রিসার্চ সেন্টার কাজ করে চলছে উচ্চ শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে। এটি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুমোদিত ও পরিচালিত। তথ্য প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং জৈব চিকিৎসা বিজ্ঞান, পরিচালনা ও সামজিক বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা চলছে।
এই সেন্টারে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত সদস্য রয়েছে। সেন্টারের মাধ্যমে গবেষকদের গবেষণাকর্ম পর্যবেক্ষণ করা হয়। তা সংশোধিত করা হয় এবং জার্নালে প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া গবেষণা কার্যক্রমের উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি রয়েছে। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে বিনিময় চুক্তি রয়েছে। ইতিমধ্যে অ্যালপার ডজার সায়েন্টিফিক ইনডেক্স র্যাংকিং ২০২৪ এ বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর বিভিন্ন বিভাগের মোট ৪৬জন শিক্ষক স্থান পেয়েছেন।
এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজ:
উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে একজন শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে স্টামফোর্ড বিশ^বিদ্যা য়ে একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলছে। এ লক্ষ্যে ১৮টি ক্লাব বা সংগঠন কাজ করে চলছে যার মধ্যে ‘স্টামফোর্ড ডিবেট ফোরাম’ (এসডিএফ) নিয়মিত বিতর্ক চর্চা করে চলছে। ‘স্টামফোর্ড এন্টি ড্রাগ ফোরাম’ মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে চলেছে। ‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ভলান্টিয়ার ক্লাব’ বিভিন্ন সমসাময়িক সচেতনতা মূলক কাজসহ আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করছে।‘স্টামফোর্ড জার্নালিষ্ট ফোরাম’ (এসজেএফ) গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার প্রায়োগিক চর্চা নিয়ে কাজ করছে। ‘আর্থ ফোরাম’ কাজ করছে পরিবেশ নিয়ে। বিনামূল্যে রক্তদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ‘স্টামফোর্ড ইয়েস ক্লাব’। এছাড়াও সাহিত্য ফোরাম, ‘স্টামফোর্ড ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ফোরাম’ (সেলফ), ‘স্ট্রে বার্ড’ (কালচারাল এন্ড লিটেরারি ক্লাব), ‘স্টামফোর্ড স্পট ক্লাব, ক্রিকেট, ফুটবল সহ বিভিন্ন খেলার আয়োজন করে। ‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি সোসাইটি’, ‘ফিল্ম স্টুডেন্ট সিনে ফোরাম’ এবং ‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ড্রামা সোসাইটি’ অর্থনীতি বিভাগের ‘ ‘স্টামফোর্ড সোশাল সায়ন্সস্টাডি ফোরাম’, ব্যবসায় প্রশাসনে ‘স্টামফোর্ড বিজনেস ফোরাম’, ফার্মেসী বিভাগের ফার্মা ফোরাম, ‘স্টামফোর্ড লাইফ সাইন্স ক্লাব ও রোবোটিকস ক্লাব নিয়মিত নিজস্ব অঙ্গনে কাজ করে চলেছে।
মন্তব্য করুন