প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থার বিদ্যমান সমস্যার সমাধান এবং কাঙ্ক্ষিত মান উন্নয়ন করাই এ সরকারের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের আয়োজনে ’গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দার্শনিক ভিত্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের সুযোগ হয়ে এসেছে। আমরা যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতিগুলো দেখি, তখন সেগুলো আমাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমাদের সবার দায়িত্ব নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ভাষাজ্ঞান ও গাণিতিক দক্ষতার কাঙ্ক্ষিত উত্তরণ করতে পারলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মূল লক্ষ্য অর্জিত হবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সামাজিক আচরণের বিকাশে ও শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।
এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা এতদিন শাব্দিক স্বাধীনতা পেলেও অধিকার পাইনি বলে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান দেখতে হয়েছে। আমরা যে না বলা কথা বলতে পারিনি, সেটাই দর্শন হওয়ার কথা। ২০২৪-এর অভ্যুত্থান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের পরিবর্তনে সবার এগিয়ে আসা উচিত। আমাদের অধিকার হরণ করা হয়েছিল বলে রক্তক্ষয়ী ২৪ দেখতে হয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকার যাতে আর কখনো লঙ্ঘন না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে স্থায়ী সমাধানে সবার এগিয়ে আসতে হবে।
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে অনেক বিষয়ের সংস্কার হচ্ছে। এখন গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের দার্শনিক ভিত্তি কী হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। আমরা সবাই একসাথে ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এখন দেশের সংস্কারে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
মূল প্রবন্ধ পাঠে সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মঈনুল আলম নিজার বলেন, আড়াই হাজার বছর আগের গণতন্ত্র দিয়ে আমাদের দেশ চলছে। ফলে প্রত্যেক বছর নির্বাচনের সময় আমাদের দেশে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এখন সংবিধানকে জনগণের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে। রাষ্ট্রকে জাতির প্রশ্নে নিরপেক্ষ থাকা উচিত। এছাড়া আমাদের উচিত শ্রেণি এবং গোষ্ঠীর ধারণা থেকে বের হয়ে আসা। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মানুষের ভাগ্য ন্যায্যতা ও সাম্যতার ভিত্তিতে হতে হবে।
অনুষ্ঠানে দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদা আকন্দের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক এএসএম আনোয়ারুল্লাহ ভুঁইয়া, অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসেন তালুকদার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন