কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তরিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ আমলের একজন কাউন্সিলরের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে খিচুড়ি ভোজের আয়োজন করেছেন। এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জা ও অপমানজনক। আওয়ামী আমলের কাউন্সিলরের সহায়তা নিয়ে তরিকুল ইসলাম আন্দোলনকারীদের অপমান করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হান্নান রহিম বলেন, যেখানে আন্দোলনের সময় আহতরা হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, সেখানে তারা এত টাকা খরচ করে খিচুড়ি ভোজ আয়োজন করেছেন। ভারতের আগ্রাসন নিয়ে প্রচার হচ্ছে, দাউদকান্দিতে আমাদের সহযোদ্ধা নিহত হয়েছেন, এসব কিছু বাদ দিয়ে তারা এখন খিচুড়ি ভোজ আয়োজন করছে। তা ছাড়া তরিকুল ইসলামই কেন এই খিচুড়ি ভোজের অর্থায়ন করলেন? তার কী উদ্দেশ্য ছিল?
হান্নান রহিম আরও বলেন, আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দিতে চাই যে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তরিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আর কখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, আমি জানি না তারা কেন তরিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। আমি আসলে আগে জানতে চাই, তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার কারণটা কী। তারপর আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করব।
শুক্রবার ‘ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ’ আয়োজনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি অনুষ্ঠান হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এদিন দুপুর ১২টা থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। পরে বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা শেষে শুধু খিচুড়ি ভোজের আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে সমাবেশ ও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন