বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের ওপর ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে ‘হিমশিম’ খাচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. জুলহাস উদ্দিন। একদিকে বক্তব্য দিতে গিয়ে উপাচার্যের অপ্রাসঙ্গিক কথায় হাসাহাসির পাত্র হচ্ছেন তিনি। আবার উপাচার্যের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা প্রদানে আশ্বস্ত করলেও শিক্ষার্থীরা তাতে ভরসা পাচ্ছেন না। সিনিয়র শিক্ষকদের আচরণ, প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নিয়ে চলছে সমালোচনা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইট-পাথর মেরে বুটেক্স শিক্ষার্থীদের আহত করার ঘটনায় তৎক্ষণাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা অভিযোগ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। অল্প সংখ্যক পুলিশ এনে কার্যকর কিছু করতে না পারা, পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও পরে আবার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেনাবাহিনী ওই পরিস্থিতি রেখে চলে যায়। উপাচার্য উপস্থিত থেকেও সেনাবাহিনী তার নির্দেশ তওয়াক্কা না করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার দিন রাতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আজীজ হলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয় উপাচার্যকে বলার পর ‘আমার নিরাপত্তা কে দেবে’ উপাচার্যের জবাবে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার পরদিন সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিনিয়র শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ আসে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদান করতে বলা হলে অধ্যাপক মো. আলী এবং অধ্যাপক মমিনুল আলম ডালিম বলেন, ‘তোমাদের রেস্পন্সিবিলিটি আমাদের না, পারলে তোমরা থানায় যাও।’
আবার অধ্যাপক মমিনুল আলম ডালিম উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের ‘উৎসবের চোখ ডেমেজ হইয়া গেছে তো আমি কী করব’, ‘এত হেডাম থাকলে পলিটেকনিকের লতিফ হলের সঙ্গে যাইয়া আবার মারামারি করো’ ইত্যাদি বলার অভিযোগ আসে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অডিটোরিয়ামে শিক্ষকদের সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনায় বসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও বর্তমান ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যেসব দাবি আসে তা হলো : প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, এক সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রসংসদ গঠন করা, প্রশাসনিক নিরাপত্তা প্রদান এবং ব্যর্থ হলে প্রশাসনে রদবদল আনা, দ্রুত সম্ভব আইনি প্রক্রিয়ায় হামলায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা, বিটাক মোড়ে গেইট নির্মাণ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
তাছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবি, অধ্যাপক ড. মমিনুল আলম ডালিম এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী যেন প্রকাশ্যে ক্ষমা চায় এবং নিরাপত্তা ইসুতে যেই কমিটি গঠন হয়েছে তাতে ওই দুই শিক্ষক যেন না থাকে।
শিক্ষার্থীদের এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানা যায়।
মন্তব্য করুন