রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। ২০২৪-২৫ সেশনের আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যদি সাত কলেজের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে তাহলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে বলে জানান তারা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আবার সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হলে প্রশাসনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। দাবি না মানলে রাজপথ থেকে ঢাবি প্রশাসনকে চাপ দেওয়া হবে। ভিসি অফিস, রেজিস্ট্রার ভবন ও একাডেমিক ভবনে তালা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
এসময় আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্বাস উদ্দিন বলেন, সাত কলেজের অধিভুক্ত বাতিল বিষয়টা আজকের নয়, আমরা ২০১৯ সালে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের আন্দোলন করেছি। ২০১৯ সালের সাত কলেজ বাতিল আন্দোলনে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভাই এবং নাহিদ ভাই। কিছুদিন আগে সাত কলেজ বিষয়ে একটা মিটিং হয় সেই মিটিংয়ে আসিফ ভাইও ছিলেন। মিটিং শেষে প্রেস সচিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সাত কলেজের জন্য আলাদা ভবনের কথা বলেছিলেন। কয়েকদিন আগেই আবার আসিফ নজরুল স্যারও সাত কলেজের জন্য ভবন নির্মাণের কথাটা পুনরাবৃত্তি করলেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এই ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থ প্রমাণিত। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত কলেজের প্রায় ২ লক্ষ ৬৭ হাজার শিক্ষার্থীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত আমরা নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।
এসময় তিনি সাত কলেজ অধিভুক্তির কারণে সৃষ্ট কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, এত প্রতিষ্ঠানের দায়ভার নেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক কার্যক্রমে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলা করা হচ্ছে। শিক্ষকরা সাত কলেজের খাতা মূল্যায়ন, কারিকুলাম ও প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা ও ভাইভা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত ও ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তীব্র সিট সংকট থাকা সত্ত্বেও সাত কলেজের জন্য ভবন নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে, যা বোকামি। ঢাবি শিক্ষার্থীদের পরিচয় বিড়ম্বনা বা অস্তিত্বের সংকট তৈরি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক র্যাংকিং গণনার ক্ষেত্রে অধিভুক্ত সাত কলেজকেও বিবেচনা করা হয় বিধায় ঢাবির অবস্থান নিম্নগামী হচ্ছে।
মন্তব্য করুন