ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ডিবেট সংগঠন ‘হাউজ অব ডিবেটরস’ আয়োজন করেছে ‘স্যাভয় প্রেজেন্টস ৮ম শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক স্মারক আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৪’। আয়োজকরা দাবি করছেন, জুলাই বিপ্লবের থিমে এটাই দেশের সবচেয়ে বড় বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর তিন দিনব্যাপী চলমান এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮টি দল। প্রতিযোগিতায় দেশ ও বহির্বিশ্বের চলমান ইস্যু, ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ, মানবসভ্যতার ধারাবাহিকতায় আজকের সংকট, অর্থনৈতিক নীতিমালা ইত্যাদি বিষয়ে বিতার্কিকরা বৈচিত্র্যময়ী চিন্তাধারা প্রয়োগ করে বহুমাত্রিকতা দান করেন।
স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ফাইনাল বিতর্কের বিষয়বস্তু ছিলো: ‘এই সংসদ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি সমর্থন করবে’। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ডিবেটিং ক্লাব এই বিতর্কে জয়ী হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ফাইনাল বিতর্কের বিষয়বস্তু ছিলো: ‘এই সংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করে’। কবি জসিম উদ্দিন হল ডিবেট ক্লাব এই বিতর্কে জয়ী হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট পলিসি সদস্য মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী।
তিনি সিভিল সার্ভিসে যোগদান করতে বিতার্কিকদের উৎসাহ প্রদান করেন। তিনি মনে করেন, পলিসি মেকিংয়ে ডিবেটারদের অংশগ্রহণ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আয়োজনের অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, শীতকালের এই বিশেষ সন্ধ্যায় কিছু তরুণ অন্যদের থেকে আলাদা করে চিন্তা করেছে। তারা সত্যকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লিপ্ত ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাওয়া স্পিরিট ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট ড. ফারুক শাহ বলেন, মানব ইতিহাসে যৌক্তিক আচরণের অভাবের কারণে সব সমস্যার তৈরি হয়েছে। দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার জন্য র্যাশনালিটি, রিজনিং, নৈতিকতার মানদণ্ড বোঝা প্রয়োজন। তিনি হাউজ অব ডিবেটরস এর মধ্যে এসব গুনাবলীর চর্চা দেখতে পান।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির (ডিইউডিএস) সভাপতি অর্পিতা গোলদার বিতর্ক প্রতিযোগিতার সময়ানুবর্তিতা অনুসরণ ও বিতার্কিকদের সার্বিক সন্তুষ্টিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আয়োজনের প্রশংসা করেন।
সবশেষে হাউজ অফ ডিবেটরর্সের সভাপতি মোনেম শাহরিয়ার অন্তু জানান, বিতর্কের মোশন (বিতর্কের বিষয়) কোয়ালিটি ছিল উঁচুমানের। কারও পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি। সর্বোপরি আয়োজন সফল হয়েছে বলে জানিয়ে এই বছরের আয়োজনের সমাপনী ঘোষণা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক চ্যাম্পিয়ন দলকে ১০ হাজার টাকা আর রানার আপ দলকে ৭ হাজার টাকা করে পুরস্কৃত করা হয়।
মন্তব্য করুন