জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ডাইনিংয়ে মাছ-মাংসের তরকারির ঝোল ঘন করতে চিড়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রান্না করার সময় ডাইনিং পরিচালক নাজমুল এবং বাবুর্চিকে হাতেনাতে ধরে শিক্ষার্থীরা। বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে এসে হাউস টিউটর তারিফুল ইসলাম তরকারিতে মেশানোর জন্য রাখা চিড়া এবং আগের দিনের বাসি খাবার উদ্ধার করেন। এ ছাড়াও অপরিষ্কার ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি করার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পান হাউজ টিউটর এবং শিক্ষার্থীরা। এর আগেও একাধিকবার মাছ-মাংসের তরকারিতে পাউরুটি পাওয়ার অভিযোগ করেছিল শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হলের ডাইনিংয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ফেলে রাখা হয়েছে রান্নার উপকরণসহ সবজি-তরকারি এবং বাসনপত্র। খাবারে হরহামেশাই পাওয়া যায় পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, যা স্বাস্থ্যঝুকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী অপূর্ব জানান, শুধু চিড়া নয়, ঝোল ঘন করতে কখনো আটা-পাউরুটিও মেশায় ডাইনিং কর্তৃপক্ষ। আর এসব খাবার খেয়েই অনেকে ডায়রিয়া-বদহজম, পেটে ব্যথাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে এর আগেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিন্তু খাবারের মানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
এ ব্যাপারে ডাইনিং পরিচালক নাজমুল হাসান জানান, চিড়াটা খাওয়ার জিনিস। এটি বাজে জিনিসও না, বিষাক্ত জিনিসও না। আর চিড়া মেশানো হলে তরকারির স্বাদেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। শুধু ঝোল ঘন করতে দেওয়া হতো। আর একদিন আগের একেবারে বাজে খাবারটা আমরা দেই না। যেটা চালানো যায়, সেটাই পরদিন ব্যবহার করি।
বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, হলের ডাইনিংয়ে তরকারির ঝোল ঘন করতে চিড়া ব্যবহার এবং বাসি খাবার পরিবেশনের ঘটনায় ডাইনিং পরিচালককে শেষ বারের মতো সর্তক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাবুর্চিকে সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আবারও এ ধরনের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ে ডাইনিং পরিচালক পরিবর্তন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, চিড়া ও পাউরুটি খাবার জিনিস হলেও, তরকারিতে মেশানো হলে এর গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে না। ফলে খাবার পরিপাকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর খাবার যতোই পুষ্টিমান সম্পন্ন হোক, এক রাতের বেশি কখনো এক্সটেনশন করা যাবে না। সেই সঙ্গে খাবার ঢেকে রেখে পরিবেশন করতে হবে, নাহলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে।
মন্তব্য করুন