‘এখনো আলো আসে, জানালা খোলা রাখি’ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) ডিবেটিং ক্লাবের আয়োজনে শুরু হওয়া জাতীয় বিতর্ক উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণীর পাশাপাশি রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজনটি।
গত ১ নভেম্বর ইংরেজি সেগমেন্ট ‘এন্টওয়াইন-২.০’-এর মাধ্যমে শুরু হয় জাতীয় বিতর্ক উৎসব। ১ ও ২ নভেম্বর দুই দিনব্যাপী আয়োজিত হয় সেগমেন্টটি। ইংরেজি সেগমেন্টটির দুইটি ব্রেকে (ওপেন ও নোভিশ) বিভিন্ন ক্লাবের মোট ৬৪টি দল অংশগ্রহণ করে। যেখান থেকে ওপেন ব্রেকে চ্যাম্পিয়ন হয় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ’ দল, ওপেন রানার্সআপ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সি’। নোভিস সেগমেন্টে চ্যাম্পিয়ন ‘কুয়েট-এ’, রানার্সআপ হয় টিম ‘ডিআরএমসি-২’।
দুই সেগমেন্টে বিভক্ত এ উৎসবের বাংলা সেগমেন্ট অনুষ্ঠিত হয় ৮ ও ৯ নভেম্বর। এতে অংশ নেয় দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৭৪টি দল। তিন পর্যায়ে বিভক্ত এই সেগমেন্টের আন্তঃস্কুল পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, রানার্স আপ মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। আন্তঃস্কুল-কলেজ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ এবং রানার্সআপ বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকা। এ ছাড়াও আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিউপি), রানার্সআপ হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দল।
জাতীয় এই বিতর্ক উৎসবের প্রধান বিচারক পর্ষদে ছিলেন দেশের স্বনামধন্য ১৭ জন প্রাক্তন বিতর্কিক। আন্তঃস্কুল-কলেজ পর্যায়, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় মিলিয়ে সর্বমোট ৬০ জন মূল বিচারক ও ১০০ জন আমন্ত্রিত বিচারক বিচারকার্যে অংশগ্রহণ করেন।
বুটেক্স অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বুটেক্স উপাচার্য অধ্যাপক ড. জুলহাস উদ্দিন। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন অকো-টেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান (সিআইপি), ড. পেট্রির (জার্মানি) এডভাইজার ইঞ্জিনিয়ার মো. সাঈদুর রহমান, মাসকো গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার এটিএম মাহবুবুল আলম মিল্টন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কাবেরী মজুমদার এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ পরিচালক ড. মো: রিয়াজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন বুটেক্স ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর সহকারী অধ্যাপক আয়েশা সিদ্দিকা এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বুটেক্স ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বুটেক্স উপাচার্য অধ্যাপক ড. জুলহাস উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, বিতর্ক মানুষের জীবনের সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। বিতর্কের মাধ্যমে সত্য উন্মোচিত হয়। একজন বিতর্কিত জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই তার এ দক্ষতার জন্য সুফল ভোগ করে। অনেকে অনেক ধরনের পেশায় নিয়োজিত থাকলেও সবাই একজন সুবক্তা হতে পারে না। বিতর্ক একজন মানুষকে একজন সুবক্তা হতে সাহায্য করে।
বিশেষ অতিথি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান (সিআইপি) তার বক্তব্যে বলেন, বাঙালি জাতি হিসেবে অত্যন্ত মেধাবী। তবে তাদের মনোভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে জড়তা লক্ষ করা যায়। বিতর্কের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সেই জড়তাকে কাটার একটা সুযোগ তৈরি হয়। এছাড়াও বিতর্ক একজনকে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া শেখায়, পাশাপাশি নিজের মত যুক্তিসহ প্রকাশের দক্ষতা বাড়ায়।
মন্তব্য করুন